‘দেশের একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘোষণা বাস্তবায়নের আওতায় এবার শেরপুর জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ৯ আগস্ট বুধবার সকালে গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে দেশের আরও বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলার সাথে শেরপুরকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও উদ্বোধন শেষে শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সদর উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর চতুর্থ পর্যায়ে নির্মিত ঘরগুলোর চাবি ও জমির দলিল উপকারভোগীদের মাঝে তুলে দেন জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি। ওইসময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষকে অত্যন্ত ভালোবাসেন। এই মানুষটির চোখের কোনায় পানি জমে গেছে দেখে আমাদের চোখে কোনায় পানি জমে গেছে। দেশকে এবং দেশের মানুষকে কি পরিমাণ ভালোবাসলে একজন সাধারণ মানুষের কথা শুনে একটা দেশের প্রধানমন্ত্রীর চোখে পানি আসে তা একজন দর্শক হয়ে আজ আমি অনুভব করলাম।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুমের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহনাজ ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, উপকারভোগী শান্তি বেগম প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুকতাদিরুল আহমেদ, সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য্য, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মিজান ও সাবিহা জামান শাপলাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকবৃন্দ ও উপকারভোগীগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর চতুর্থ পর্যায়ে এবার ভূমি ও গৃহ প্রদানের মাধ্যমে সদর উপজেলা ও শ্রীবরদী উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়। এর আগে ৩য় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেরপুর জেলার নকলা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়ে শেরপুর জেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হলো।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আর্থিক সহযোগিতায় শেরপুরে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে ৯১৯টিসহ মোট ১৭১৬টি একক গৃহের বরাদ্দ পাওয়া যায়। এছাড়া গুচ্ছগ্রাম ও অন্যান্য উপায়ে আরও ১৫৪টিসহ মোট ১৮৭০টি ভূমিহীন, গৃহহীন, আশ্রয়হীন, তৃণমূল ও প্রান্তিক পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ইতোপূর্বে ১৫৮১টি গৃহের উদ্বোধন করা হয়েছে এবং নকলা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এবার চতুর্থ পর্যায়ে শেরপুর সদরে ১০২টি ও শ্রীবরদীতে ৩৩টি ঘর নির্মাণ এবং হস্তান্তর করা হয়েছে।