শেরপুরের শ্রীবর্দীতে চাঞ্চল্যকর কিশোরী অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টা মামলায় ৯ বছর আত্মগোপনে থাকা সাজাপ্রাপ্ত ২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪ (জামালপুর) ক্যাম্পের সদস্যরা। ৭ জুলাই শুক্রবার রাতে জেলা সদর ও শ্রীবরদী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ওই ২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উত্তর শ্রীবরদী এলাকার শমসের আলীর ছেলে মো. আমের আলী (৪০) ও একই উপজেলার ছনকান্দা বেপারীপাড়ার সুরুজ মিয়ার ছেলে কাশেম (৩৫)।
র্যাব-১৪ (সিপিসি-১) জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান ওই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শনিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে তাদের সাজা পরোয়ানামূলে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাড়িতে আমের আলী ও কাশেম বাসা ভাড়ার জন্য আসে। সেদিন স্কুলছাত্রী তার নানা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলে আমের আলী ও কাশেম পিছু নেয়। স্কুলছাত্রী নানার বাড়ির কাছাকাছি মুন্সিপাড়া পৌঁছালে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয় তাকে। পরে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে উড়না দিয়ে মুখ বেঁধে অটোরিকশা দিয়ে কর্ণঝোড়া এলাকার কুলগাঁও পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে আমের আলী ও কাশেম। এরপর চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এলে পালিয়ে যায় তারা।এদিকে স্কুলছাত্রী বাড়িতে না আসায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে কাকিলাকুড়া ব্রিজের পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় খোঁজ মেলে স্কুলছাত্রীর। পরে সুস্থ হলে সে পরিবারকে ঘটনা খুলে বলে। এ ঘটনায় ২৩ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর বাবা শ্রীবরদী থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় ২০২১ সালের ২৩ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আমের আলী ও কাশেমকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। এছাড়া অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৪)(খ) ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামিরা ৯ বছর আত্মগোপনে ছিলেন।
পরে ৭ জুলাই রাতে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামানের নেতৃত্বে ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানার উপস্থিতিতে র্যাবের একটি অভিযানিক দল অভিযান চালায়। এতে শ্রীবরদীর ছনকান্দা ব্যাপারীপাড়া হতে কাশেমকে ও শেরপুর শহরের খোয়ারপাড় হতে আমের আলীকে গ্রেফতার করে।
র্যাব-১৪ (সিপিসি-১) জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান বলেন, আমের আলী ও কাশেমকে সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপরাধ দমনে র্যাবের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।