মাদ্রাসা থেকে না বলে চলে আসার অভিযোগে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় মো. সোয়াদ মিয়া (১০) নামের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পৌরশহরের দক্ষিণ বাজার মাদ্রাসাতুল মদিনা নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৮ মে রবিবার ওই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি পৌরশহরের গোবিন্দনগর এলাকার মো.ভুলু মিয়ার ছেলে। ভুক্তভোগী সোয়াদ শহরের ছিটপাড়া মহল্লার হারুণ অর রশিদের ছেলে।
![Shamol Bangla Ads](https://shamolbangla24.com/wp-content/uploads/2024/01/Ad-1-scaled.jpg)
এদিকে ওই ঘটনায় গতকাল রাতে সোয়াদের বাবা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে রাতেই গ্রেফতার করে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে। গুরুতর আহত সোয়াদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।
সোয়াদের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পৌরশহরের ছিটপাড়া এলাকার হারুণ অর রশিদের ছোট ছেলে সোয়াদ মিয়া শহরের দক্ষিণ বাজার মাদ্রাসাতুল মদিনায় তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। গত বৃহস্পতিবার সোয়াদ শিক্ষকদের না বলে বাড়িতে চলে যায়। পরে গত রবিবার সকাল ৯টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের ৩ শিক্ষার্থীকে পাঠিয়ে সোয়াদকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় নিয়ে যান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান। ওইসময় মাদ্রাসা থেকে না বলে চলে যাওয়ার অপরাধে শিক্ষক মোখলেছুর রহমান সোয়াদকে বেত দিয়ে মারধর করেন। পরে সোয়াদের শরীর থেকে পাঞ্জাবী খুলিয়ে সেই পাঞ্জাবী দিয়ে দুই হাত পেছন দিকে বেঁধে পরনের পায়জামা নামিয়ে পশ্চাতদেশে ও উরুতে বেত দিয়ে বেধরক আঘাত করেন। প্রায় আধাঘন্টা মারধরের পর সোয়াদ বাড়ি ফিরে মাকে জানিয়ে কাঁদতে থাকে। পরে সোয়াদের মা-বাবা বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। পরে এলাকাবাসী ওই পরিবারকে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেন। পরে রবিবার রাতে সোয়াদের বাবা হারুন অর রশিদ বাদি হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোখলেছুর রহমানকে গ্রেফতার করে।
![Shamol Bangla Ads](https://shamolbangla24.com/wp-content/uploads/2024/01/Ad-2-scaled.jpg)
সোমবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে,সোয়াদ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। তার পাশে মা বসে আছেন। শরীরের আঘাতে শিশুটি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না বলে তার মা খাদিজা বেগম জানান। তিনি বলেন, শরীর খারাপ লাগায় গত বৃহস্পতিবার ছেলে মাদ্রাসা থেকে না বলে বাড়ি চলে আসে। এই অপরাধে আমার ছেলেটারে বাড়ি থাইকা ধইরা নিয়া শিক্ষক এই ভাবে মারধর করছে। এতে ছেলেডা শরীরের পেছনে লাল লাল চাক চাক দাগ কইরা ফালাইছে। এই রহম শিশুরে কেউ মারবার পারে? আমি ওই শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শিক্ষার্থী সোয়াদ বলেন, বৃহস্পতিবারে হুজুরকে না বইলা মাদ্রাসা থেকে চইলা আসছিলাম। পরে রবিবার সকালে ৩ ছাত্ররে দিয়া আমায় ডাকাইয়া নিয়া হুজুর খুব মারছে। আমার পাঞ্জাবী খুলাইয়া হাত বাঁইধা, মুখ চাইপা ধইরা, আর পরনের পায়জামা নামাইয়া পিছনে বেত দিয়া বাইরাইছে৷
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ওই শিশুর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা করা হয়েছে। গত রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
![](https://shamolbangla24.com/wp-content/uploads/2023/11/final01.gif)