বিস্ফোরক আইনের পৃথক ৩ মামলায় আসামি ১৮১ জন
শেরপুরের ৩ উপজেলায় নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে বিএনপির ১১ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৪ মে রবিবার রাতে সদর, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওইসময় তাদের কাছ থেকে ককটেল ও পেট্রোল বোমাসহ নাশকতার নানা সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে শ্রীবরদী শহর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজান, উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান, পৌর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, কাকিলাকুড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আনোয়ারুল ইসলাম রানা, ভেলুয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক বাদল মিয়া ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক খলিলুর রহমান, শেরপুর শহর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সাদেক হোসেন, আলম খান ও রুহুল আমিন এবং ঝিনাইগাতীর রুকনুজ্জামান ও শহিদুল্লাহ। ওইসব ঘটনায় সোমবার স্ব-স্ব থানায় বিস্ফোরক আইনের ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসাথে সোমবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, রবিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার দহেড়পাড় এলাকার ঈদগাহ মাঠে অভিযান চালায় পুলিশ। ওইসময় ৩টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ১০টি লোহার রড, ৪টি বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ বিশেষ, ২টি দা ২০টি বাঁশের লাঠি ও ২০ টি ইটের টুকরাসহ ৬ বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ওই ঘটনায় শ্রীবরদী থানায় ৪১ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাত আরও ৫০/৬০ জনের নামে থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।
এদিকে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, উপজেলার ডাকাবর এলাকায় বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী নাশকতার উদ্দেশ্যে জড়ো হচ্ছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রুকনুজ্জামান ও শহিদুল্লাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সেখান থেকে ৫টি ককটেল ও পেট্রোল বোমা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ১৫ জনকে স্বনামে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করে ঝিনাইগাতী থানায় বিস্ফোরক আইনের একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
অপরদিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেরপুর শহরের চাপাতলী এলাকায় জেলা পরিষদের সামনের সড়কে অভিযান চালিয়ে নাশকতার চেষ্টাকালে ৪টি ককটেলসহ বিএনপির ৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় ২৫ জনকে স্বনামে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় বিস্ফোরক আইনের একটি মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তবে সোমবার দুপুরে জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেলের বাসায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ১৯ মে সারাদেশের বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে পুরো জেলা থেকে ১১ বিএনপি নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। একইসাথে ওই রাতেই বিএনপির সভার জন্য জেলা বিএনপির সভাপতির বাড়ির ভেতর প্রস্তুতকৃত প্যান্ডেল খুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে শেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. সোহেল মাহমুদ পিপিএম বলেন, পুলিশের মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়ার কথা সঠিক নয়, এটা তাদের অর্ন্তদ্বন্দ্বের জের হতে পারে। এমন কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। এমনকি তারা অভিযোগও করেনি। এছাড়া ১১ নেতা-কর্মী গ্রেফতারের বিষয়ে বলেন, গতকাল আমাদের স্বাভাবিক কাজের অংশ হিসেবে কিছু লোকজন গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বিএনপি নেতাকর্মী কিনা এই দলীয় পরিচয় তো আমরা নিশ্চিত না। তবে আমাদের স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে, জিডি, ওয়ারেন্ট ও সাধারণ মামলায় এমন অভিযান আমাদের প্রতিনিয়ত থাকে।