শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বোরো আবাদের নতুন জাত বিনা ধান-২৫ কর্তন এবং কৃষকদের সাথে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩ মে বুধবার বিকেলে উপজেলার কদমতলী গ্রামে বিনা উপকেন্দ্রের উদ্যেগে ওই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালী বক্তব্য রাখেন বিনার মহাপরিচালক প্রজননবিদ ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। নালিতাবাড়ী উপজেলা বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মো. মাহবুবুল আলম তরফদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস। বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: ফরহাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওয়াদুদ, কৃষক আবুল কাশেম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সভাপতির স্বাগত বক্তব্যে নালিতাবাড়ী উপজেলা বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মো: মাহবুবুল আলম তরফদার বলেন, এই জাতটি উচ্চ ফলনশীল। কৃষক বিনা ধান-২৫ আবাদে কৃষক লাভবান হবেন। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের জীবনকাল ১৩৮ থেকে ১৪৮ দিন, গাছ লম্বা কিন্তু শক্ত, হেলে পড়ে কম। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১১৬ সে.মি। প্রতি গাছে ১০ থেকে ১২টি কুশি থাকে। ছড়ার দৈর্ঘ্য গড়ে ২৭০ সে.মি লম্বা। প্রতি শীষে পুষ্ট দানার পরিমাণ ১৫০ থেকে ১৫৫টি। ১০০০ টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ১৯৭ গ্রাম। ভাত সাদা, ঝরঝরে ও সুস্বাদু ফলে বাজারমূল্য বেশি এবং রপ্তানী উপযোগী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, বিনা ধান-২৫ জাতের ভবিষ্যত অনেক সমৃদ্ধ। এই ধানের চাল খেতে অনেক সুস্বাদু। আমি নিজে এটা পরীক্ষা করেছি। আমি আশা করি আগামী বছর বোরো আবাদ থেকে শেরপুর জেলার প্রায় সব কৃষকই বিনা ধান-২৫ জাতের চাষাবাদ করবে। এর ফলে বিদেশ থেকে চিকন চাল আমদানি নির্ভরতা কমবে।পাশাপাশি বিদেশে এই ধানের চাল রপ্তানী করে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
জেলা কৃষি বিভাগ ও নালিতাবাড়ী উপজেলা বিনা উপকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৮ বছর গবেষণা শেষে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বোরো মৌসুমের একমাত্র চিকন ধান বিনা-২৫। উচ্চ ফলনশীল ধানের মত এই ধানেরও ফলন বেশি। সেই সাথে লম্বা, সরু এবং খেতে ও সুস্বাদু। যা ভবিষ্যতে রপ্তানীযোগ্য চাল হিসেবে সুনাম কুড়াবে।