শেরপুরে পৃথক ঘটনায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালককে খুন করে ইজিবাইক ছিনতাই ও এক গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছে। ২৯ এপ্রিল শনিবার ভোরে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ এলাকায় ও চরমোচারিয়া ইউনিয়নের চরভাবনা এলাকায় ওই পৃথক ঘটনা ঘটে। নিহতরা হচ্ছেন খুনুয়া মধ্যপাড়া এলাকার হলু মিয়ার ছেলে ইজিবাইক চালক মো. উজ্জল মিয়া (৪০) ও মো. আজিজলের কন্যা গৃহবধূ আসমা বেগম (৩৮)। এদিকে গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় স্বামী আনিসুর রহমানকে (৪২) আটক করেছে পুলিশ। আনিস একই ইউনিয়নের চরভাবনা এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে যাত্রী বহনের উদ্দেশ্যে বের হয় সদর উপজেলার খুনুয়া মধ্যপাড়া এলাকার উজ্জল মিয়া। তবে গভীর রাতেও বাড়ি না ফিরলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবারের লোকজন। এদিকে পরদিন সকালে ভীমগঞ্জ বাজারের পাশে জোড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ধান ক্ষেতের আইলে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে লাশটি ইজিবাইক চালক উজ্জলের বলে শনাক্ত করে। পুলিশ নিহত উজ্জলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। পুলিশ, সিআইডি, র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, দুর্বৃত্তরা উজ্জলকে হত্যা করে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান জানান, ইদানিং রাতে ইজিবাইক নিয়ে বের হওয়ার পর সকালে চালকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। আমরা এটি রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যারা রাতে ইজিবাইক চালান তারা অপরিচিত যাত্রী বহনে যেন সচেতন থাকেন। তারপরও এরকম অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যায়। আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুতই জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অন্যদিকে শনিবার ভোরে পারিবারিক কলহের জের ধরে আসমা বেগম নামে এক গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্বামী আনিসুর রহমান। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। একইসাথে স্বামী আনিসুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। জানা গেছে, গৃহবধূ আসমা আক্তারের আগের স্বামীর দিকে দুটি সন্তান রয়েছে। আর আনিসুর রহমানেরও একাধিক স্ত্রী রয়েছে। আনিসুর একসময় ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করলেও বর্তমানে এলাকাতে কৃষিকাজ করেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে শনিবার ভোরে স্ত্রী আসমাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় উপুর্যপরি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল বলেন, স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যে ঘাতক স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।