ঈদের আগে রাজধানীতে একের পর এক মার্কেটে আগুনের ঘটনাকে নাশকতা বলে সন্দেহ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার গণভবনে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে নিহত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পরিবার, বিগত বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে অগ্নিদগ্ধ, আহত এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এমন সন্দেহের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অগ্নি সন্ত্রাস, জীবন্ত মানুষকে কীভাবে পোড়ানো যায়। সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার। এখন দেখেন কয়েক দিন ধরে মার্কেটে আগুন। হঠাৎ করে কয়েক দিন ধরে আগুন, তারপর আমার মনে সন্দেহ হলো—এটাও কী নাশকতা নাকি! ঈদে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করবে সেই পথটাই বন্ধ করে দিতে চায়। আমারতো মনে হয় এখানেও কোনো একটা ঘটনা আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্যায় যারা করেছে তারা কিন্তু শাস্তি পাবে। শাস্তি পেয়েছে, পাচ্ছে, পাবে। আরও যারা বাকি আছে সেটা সেটা (বিচার) আমরা অবশ্যই করব।’
দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার একটাই চেষ্টা—এ দেশের মানুষ যেন একটু ভালো থাকে। আজকে যখন মানুষ ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছে, অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল হচ্ছে, সেই সময় আবার অগ্নি সন্ত্রাস, মার্কেটে আগুন, নানা ভাবে মানুষের ক্ষতি করা। এটা যারা করে এদের প্রতি জাতির ঘৃণা। আল্লাহ সহ্য করবে না।’
খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা এ দেশের মঙ্গল চায় না। এ দেশের ভালো চায় না।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচারের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অনেক জজ সাহেব বিব্রত বোধ করেন। এটাও আমাকে দেখতে হয়েছে। যেখানে এতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে তার বিচারের রায় দিতে লজ্জা করে।’
ক্ষতিগ্রস্তদের লক্ষ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার বাবা স্বাধীন করে গেছেন। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে। সেই কাজটাই আমার কাজ হিসেবে নিয়েছি। সেই সঙ্গে যারা কষ্ট পাচ্ছে তাদের পাশে আমি দাঁড়াচ্ছি। আমি আপনাদের পাশে আছি। কারণ আমিতো আপনাদেরে সমব্যথী।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ড এবং বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে আলাদা দুটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহতদের কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী।