শেরপুরের নকলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) সহযোগিতায় পুত্রবধূ কর্তৃক বিতাড়িত বৃদ্ধা ফাতেমা বেগমের (৭০) জায়গা হয়েছে নিজ ভিটায়। ঘটনাটি ঘটেছে ১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে পৌরসভার কলাপাড়া মহল্লায়।

ইউএনও বুলবুল আহমেদ ফাতেমাকে উপজেলা পরিষদ থেকে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন। যা দিয়ে ফাতেমা নিজ ভিটায় বসবাসের জন্য একটি ঘর তুলবেন। দিয়েছেন পরনের জন্য ২টি শাড়ি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফাতেমার বিয়ে হয় কলাপাড়া মহল্লার পার্শ্ববর্তী বাড়ির আব্দুর রহমানের সাথে। বনিবনা না হওয়ায় প্রায় ৩০ বছর আগে তাঁদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তখন থেকে তিনি কলাপাড়া মৌজায় পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৯ শতক জমিতে একটি ছাপড়া ঘরে বসবাস করতেন এবং বাড়িবাড়ি ঘুরে কাপড় বিক্রি করে দিনাতিপাত করতেন। ফাতেমার ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।

কিছুদিন আগে ছোট ছেলে নুর ইসলাম (৪৫) ওই জমিতে একটি আধাপাকা ঘর তৈরি করার সময় ফাতেমার ছাপড়া ঘরটি ভেঙ্গে ফেলতে হয়। তখন থেকে ফাতেমার জায়গা হয় ছেলের আধাপাকা ঘরে।
১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ছোট ছেলে নুর ইসলামের স্ত্রী নুর বানু (৪০) অসুস্থ্য ফাতেমাকে জোর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। ফাতেমার জায়গা হয় বাড়ির সামনে পাকা সড়কের উপর।
ঘটনাটি ইউএনও বুলবুল আহমেদ জানতে পেরে রাতেই ফাতেমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন এবং চিকিৎসার জন্য নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
একটু সুস্থ্য হলে ৩ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে ইউএনও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফাকে সাথে করে ফাতেমাকে নিজ ভিটায় নিয়ে যান।
এসময় ফাতেমার পুত্রবধূ নুর বানু নিজের ভুল বুঝতে পেরে ফাতেমার কাছে ক্ষমা চান এবং ভবিষ্যতে শ্বাশুড়ির সাথে খারাপ আচরণ করবেননা বলে জানান।
ফাতেমা জানান আমি ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনীদের নিয়ে একসাথে জীবনের বাকী দিনগুলো কাটাতে চাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন ফাতেমার ৪ ছেলের মধ্যে ৩ জন জীবিকার তাগিদে বাহিরে থাকেন। ছেলেরা কথা দিয়েছেন তাঁরা মায়ের ভরণপোষণ করবেন। আমারা ফাতেমাকে আলাদা ঘর করার জন্য ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছি। পরণের জন্য দেওয়া হয়েছে ২টি শাড়ী।