বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এক সপ্তাহ ধরে দুই উপজেলার গহীন অরণ্যে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গত সোমবার রাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যেরা জঙ্গিদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত সপ্তাহের মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) থেকে সেনাবাহিনী ও র্যাব যৌথ অভিযান চালাচ্ছে রুমা ও রোয়াংছড়ির বিভিন্ন জায়গায়। অভিযানকালে পর্যটকদের অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের নেতৃত্বে রয়েছেন নাথান বম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সাবেক ছাত্র। বম, খুমি, পাংখোয়া, খেয়াং, লুসাই এই পাঁচ সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিয়ে সংগঠনটি গঠিত বলে জানা গেছে। এর নেতৃত্বে রয়েছে বম সম্প্রদায়ের লোকজন। কেএনএফ সদস্যদের সশস্ত্র অবস্থান মূলত বান্দরবানের গহীন অরণ্য রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায়। রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়থলি ইউনিয়নেও তাদের যাতায়াত রয়েছে।
জানা গেছে, ২০২০ সালে কেএনএফের প্রধান নেতা নাথান বমের সঙ্গে জঙ্গি নেতা শামিন মাহফুজের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য উভয়ের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। গত ৮ অক্টোবর দুই জঙ্গি সদস্য র্যাবের হাতে আটক হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে কেএনএফের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসে। মাসোহারার বিনিময়ে কেএনএফ জঙ্গিদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এরপর ১১ অক্টোবর থেকে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন শিবলী বলেন, ‘রুমা ও রোয়াংছড়িতে অভিযানের বিষয়গুলো যৌথবাহিনী দেখছে। চলমান অভিযান সম্পর্কে প্রশাসনকে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। দুর্গম এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানের দরুণ পর্যটকদের নিরাপত্তায় সাময়িকভাবে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’