শেরপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগে বিবদমান ২ প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা পরিষদের বিদায়ী প্রশাসক হুমায়ুন কবীর রুমানের মধ্যে সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা পরিষদ ভবনে চলা এক বিশেষ বৈঠকে ওই সমঝোতার পরিবেশ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিবদমান ২ প্রার্থীকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের একটি টিম প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করবেন। সাক্ষাত সম্ভব হলে দলীয় প্রধানের নির্দেশনায় হয়ে যেতে পারে সফল সমঝোতা। আর এর মধ্য দিয়ে দলীয় অঙ্গনেও বইতে পারে ঐক্যের সুবাতাস। দলের নেতা ও দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে মিলেছে এমন তথ্য।

জানা যায়, এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিদায়ী প্রশাসক হুমায়ুন কবীর রুমান, আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নাসরিন রহমান দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন। অবশেষে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বোর্ডের এক সভায় বাছাই শেষে এ জেলায় চেয়ারম্যান পদে এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পালকে মনোনীত করা হয়। কিন্তু অপর ২ জন সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও বিদায়ী প্রশাসক হুমায়ুন কবীর রুমানের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার তৎপরতাসহ গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে দল মনোনীত প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে রবিবার বিকেলে শহরের হোটেল আলীশানে দলের এক বিশেষ সভা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দলীয় মনোনীত প্রার্থী এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল এবং বিবদমান একটি বলয়ের নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু ও শামছুন্নাহার কামালসহ উপজেলা-শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ৫ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পর্যায়ের সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা অংশ নেন। সেই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে হুমায়ুন কবীর রুমানের সাথে কথা বলে তাদের বলয়ের নেতাদের সাথে সোমবার বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি।

এ প্রেক্ষিতেই জেলা পরিষদ প্রশাসকের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সমঝোতা বৈঠক। সূত্রমতে, বৈঠকে চেয়ারম্যান পদে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নে জেলা আওয়ামী লীগের পরবর্তী সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদ ছেড়ে দেওয়ার দাবি ও প্রসঙ্গ উঠায় এবং সেটি সমাধান করা সম্ভব না হওয়ায় এবং তাতে কারও এখতিয়ার না থাকার প্রেক্ষিতে ঢাকায় যাওয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে আলোচিত এ বিষয়টিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল খুবই ইতিবাচক লক্ষণ বলে মনে করছেন। তাদের মতে, ভেদাভেদ ভুলে নির্বাচন ও দলে যত সমঝোতা নিশ্চিত করা যায় ততোটাই মঙ্গল। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে দলের সাংগঠনিক ঐক্য। তাই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও বিষয়টি নিয়ে জোরালো ভাববেন- এমনটাই প্রত্যাশা পর্যবেক্ষক মহলের।