ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে বিষপানের পর মৃত্যুর সাথে দীর্ঘ ১৭ দিন লড়াই করে অবশেষে মারা গেল জোনাকি আক্তার (১৫) নামে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের কুত্তামারা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। জোনাকি স্থানীয় আব্দুল জব্বারের মেয়ে
পুলিশ ও ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার চান্দেরনগর গ্রামের জনৈক চাঁন মিয়ার ছেলে নাজমুল (২৮) কুত্তামারা গ্রামে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার কাজ করতো। গত ১৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল জব্বার তার কন্যা জোনাকিকে ঘরে একা রেখে পাশের বাজারে চা পান করতে যান। এদিকে জোনাকির মা ঢাকার একটি পোষাক কারখানায় কাজ করেন বিধায় জোনাকিকে ঘরে একা পেয়ে অভিযুক্ত নাজমুল জোর করে ধর্ষণ করে। এতে জোনাকি কান্নাকাটি শুরু করলে নাজমুল পালিয়ে যায়।
পরে ঘটনা জেনে জোনাকির বাবা পুলিশের আশ্রয় নিতে চাইলে স্থানীয় লোকজন তাতে বাঁধা দেয় এবং স্থানীয়ভাবে মিমাংসার উদ্যোগ নেয়। এ ঘটনা প্রকাশ পেলে কলঙ্ক হবে ভেবে আব্দুল জব্বার তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। একপর্যায়ে এ ঘটনা এলাকায় প্রকাশ হয়ে পড়লে জোনাকিকে ভঁৎসনা করে কথাবার্তা বলতে থাকে স্থানীয়রা। এ অপমান সইতে না পেরে গত ২১ ডিসেম্বর জোনাকি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এমতাবস্থায় তাকে প্রথমে নালিতাবাড়ী ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জোনাকির কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। পরদিন আবারও অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ৭ জানুয়ারি শুক্রবার জোনাকি মারা যায়।
এদিকে এর আগেই গত ২ জানুয়ারী জোনাকির পিতা আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাজমুলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল জানান, এ ঘটনায় মেয়ের পিতা বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে সহযোগি দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।