ads

রবিবার , ২১ নভেম্বর ২০২১ | ১২ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

ঝিনাইগাতীতে গারো সম্প্রদায়ের ওয়ানগালা উৎসব উদযাপিত

স্টাফ রিপোর্টার
নভেম্বর ২১, ২০২১ ২:৫৪ অপরাহ্ণ

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গারো সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অন্যতম উৎসব নবান্ন বা ওয়ানগালা উদযাপিত হয়েছে। রবিবার দিনব্যাপী উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর গির্জা চত্বরে ওই উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ। ওইসময় জেলা প্রশাসকপত্নী জান্নাতুল ফেরদৌস প্রিয়া, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Shamol Bangla Ads

এদিন সকাল ৯টায় থক্কা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ফাদার বিপুল ডেভিট দাস সিএসসি। উৎসবে ক্রুশচত্বরে বাণী পাঠ, খামালকে কুথুব পড়ানো ও থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্কা দেয়া, পবিত্র খ্রিস্টযাগ, দান সংগ্রহ, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

ওয়ানগালা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার বিপুল ডেভিট দাস সিএসসি জানান, একসময় গারো পাহাড়ি এলাকায় জুম চাষ হতো এবং বছরে মাত্র একটি ফসল হতো। তখন ওই জুম বা ধান ঘরে উঠানোর সময় গারোদের শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’ কে উৎসর্গ করে ওই উৎসবের আয়োজন করা হতো। তিনি আরও জানান, গারোদের ওই শস্য দেবতা একসময় পাহাড়ি এলাকার গারোদের হাতে কিছু শস্য দিয়ে বলেছিল, ‘তোমরা এটা রোপণ কর তাতে তোমাদের আহারের সংস্থান হবে এবং তোমরা যে শস্য পাবে তা থেকে সামান্য কিছু শস্য আমার নামে উৎসর্গ করবে।’ এরপর থেকেই গারোরা তাদের শস্য দেবতাকে এই ফসল উৎসর্গ করে আসছে।

Shamol Bangla Ads

খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর গারোরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রথাটি এখন ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে একত্রে পালন করে আসছে। অর্থাৎ একসময় তারা তাদের শস্য দেবতা মিসি সালজংকে উৎসর্গ করে ওয়ানগালা পালন করলেও এখন তারা নতুন ফসল কেটে যিশু খ্রিস্ট বা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করে ওয়ানগালা পালন করেন। একইসাথে সামাজিক নানা আয়োজনসহ ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠানাদিও পালন করা হয়। মরিয়মনগরের ওয়ানগালা উৎসবটি এবার ৩৬ বছরে পা দিয়েছে। ১৯৮৫ সাল থেকে এখানে ওয়ানগালা উৎসব পালন করা হচ্ছে। গত দুই বছর কারোনার জন্য একেবারেই ঘরোয়া আয়োজনে পালিত হলেও এবার সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে একটু জাকজমক ভাবে উৎসবের আয়োজন করা হয়।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিয়মনগর খ্রিষ্টান ধর্মপল্লীর নিয়ন্ত্রণে জেলার সদর উপজেলাসহ শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী এবং জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার গারো সমাজের ৪৭টি গ্রাম রয়েছে। ওইসব গ্রামে প্রায় ২২ হাজার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। ওইসব এলাকা থেকে অসংখ্য খ্রিস্টভক্ত এবং গারাগানজিং, কতচু, রুগা, মমিন, বাবিল, দোয়াল, মাতচি, মিগাম, চিবক, আচদং, মাতাবেং ও আরেং নামে ১২ টি গোত্রের গারো সম্প্রদায়ের লোকজন এবার ওয়ানগালা উৎসবে উপস্থিত হয়।

এদিকে ওয়ানগালা উৎসব উপলক্ষে ধর্মপল্লীর পাশে বসেছিল জমজমাট মেলা। মেলায় গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোষাকসহ শিশুদের নানা রকমের খেলনা বিক্রি করা হয়। ফলে এখানে গারো শিশু ও যুবক-যুবতিরা বিভিন্ন পসরার দোকানে তাদের পছন্দের জিনিস কিনতে ভিড় জমান। ওয়ানগালা উৎসবে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে আসা গারো সম্প্রদায়ের লোকজন এবং তাদের আত্মীয়রা একে অপরের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দেখা সাক্ষাত হওয়ায় তারা অনেকটা বড়দিনের উৎসবের মতো আনন্দ উপভোগ করেন।

error: কপি হবে না!