সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে ১১ অক্টোবর সোমবার থেকে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর এ আয়োজনে ভাটা থাকলেও এবার অনেকটাই পরিবর্তিত অবস্থায় ফিরে এসেছে উৎসবের আমেজ। ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ৫ দিনের ওই পূজা আগামী ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে ধর্মীয় বিধিবিধান সমুন্নত রেখে দুর্গাপূজার আয়োজন ও অংশগ্রহণের জন্য সনাতন সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, এ বছর দেশে পূজা হবে ৩২ হাজার ১১৮টি মণ্ডপে। গত বছর করোনার মধ্যে বাংলাদেশে ৩০ হাজার ২১৩টি পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বারের চেয়ে এক হাজার ৯০৫টি বেশি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর শেরপুর জেলায় এ বছর ১৫১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর যা ছিল ১৪২টি। গতবছরের তুলনায় এবার ৯টি মণ্ডপে পূজা বেশি হচ্ছে। আর দুর্গোৎসব শান্তিময় ও নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে গ্রহণ করেছে কার্যকর পদক্ষেপ।
বলা বাহুল্য, অতীতে পূজাকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দেখা গেলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থাৎ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে সরকারের আন্তরিক চেষ্টায় সেসব ঘটনা এখন নেই বললেই চলে। বরং শেখ হাসিনার আমলে বা সুশাসনে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করছে। স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মচর্চার পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। এরপরও ১৩ অক্টোবর বুধবার কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা বিষয়ক একটি খবরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দেয়। পরে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দ্রুত শাস্তির মুখোমুখি করতে সরকারের সময়োচিত ঘোষণা ও পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সেইসাথে কুমিল্লাসহ সারাদেশে ওই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিজিবি মোতায়েনসহ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা আরোপ করা হয়েছে।

তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আনন্দটা যেন কোন অশুভ মহলের অপতৎপরতায় নিরানন্দে পরিণত না হয়, সেদিকে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকতে হবে। আনন্দ আয়োজনে অতিরিক্ত জনসমাগম যেন করোনার কারণে পরবর্তীতে বিষাদে পরিণত না হয়, সেদিকেও সবার সচেতনতা প্রয়োজন। দুর্গোৎসবের আয়োজন যেন সুন্দর ও নিরাপদ হয়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবাই নজর রাখবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
