১৪ অক্টোবর, বিশ্ব দৃষ্টি দিবস। প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালন করা হয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অন্ধত্ব এবং চোখের বিকলতা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পুরো বিশ্বজুড়ে পালন করা হয়। ২০০০ সালে লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক অনুষ্ঠিত সাইট-ফার্স্ট-ক্যাম্পেইনের ফলশ্রুতিতে এই দিবসের শুরু হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় আন্তর্জাতিক অন্ধতা দূরীকরণ সংস্থার পরিচালনায় এই দিবসটি বহুল ভাবে প্রচারিত হয়ে ভিশন ২০২০ পর্যন্ত উন্নীত করা হয়েছে। ৯ অক্টোবর, ২০১৪ সালে বিশ্ব দৃষ্টি দিবসের বিষয়বস্তু ছিল- ‘আর নয় অবজ্ঞাপূর্ণ অন্ধতা’। এটা ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্ধত্ব প্রতিরোধ জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইএবিপি) জানিয়েছে, অন্ধত্বের ৭৫ শতাংশ এবং গুরুতর দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। বিশ্ব দৃষ্টি দিবস প্রত্যেকের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করে, যেখানে সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদেরকে ‘সংহত লোককেন্দ্রিক চক্ষু যত্ন’ সেবা গড়ে তুলতে জোর দিতে পারবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৯ সালে দৃষ্টিশক্তির উপর প্রথম প্রতিবেদনটি চালু করেছিল। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব জুড়ে কমপক্ষে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন মানুষ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বা অন্ধ, তার মধ্যে এক বিলিয়ন মানুষের ক্ষেত্রে যাদের গ্লোকমা বা ছানির মতো সমস্যা হয়েছিল, তারা যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেতেন তাহলে এই অবস্থা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য অন্যান্য সাধারণ শর্তগুলো :
মায়োপিয়া (ক্ষীণদৃষ্টি) : বাড়ির ভিতরে বেশি সময় কাটানো এবং চোখের ‘কাছাকাছি কাজ’ মায়োপিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটান, এটি মায়োপিয়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি : দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতার অন্যতম কারণ হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এই রোগ দ্রুত শনাক্ত এবং চিকিৎসা করা প্রয়োজন।
বিলম্বিত শনাক্তকরণ : সর্বত্র চোখের রুটিন পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায়, রোগ শনাক্তকরণ দেরি হয়। সর্বজনীন স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তির অন্যতম অংশ হওয়া উচিৎ চোখের সেবা।
৭৪ তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশে (ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেমব্লি) প্রতিরোধ, প্রাথমিক শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা স্তরের সঙ্গে চোখের চিকিৎসা সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব দিয়েছে। জনগণ যাতে তাদের বাড়ির কাছাকাছি এই পরিষেবাগুলি পায়, সেদিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে।
চোখের যত্নের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ব্যক্তি এবং সমাজ উভয়কেই আরও সচেতন হতে হবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা রোধ করা এবং মোকাবিলা করা কেবল জীবনের মান উন্নত করে তাই নয়, মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী থাকতেও সাহায্য করে।
অন্ধত্ব এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা নিবারণে জাতীয় কর্মসূচি, ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সম্পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৬ সালে এটি চালু হয়েছিল। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল, ভারতে চোখের যত্নের পরিষেবা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্ধত্ব এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধ করা।