শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নিভৃত পল্লীতে মা-মেয়েকে ৮ জনে মিলে পালাক্রমে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ৯ অক্টোবর শনিবার রাতে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ পলাশিকুড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে রবিবার ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হচ্ছে উপজেলার দক্ষিণ পলাশিকুড়া গ্রামের আব্দুল বাছেতের ছেলে, স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রার্থী আব্দুস সাত্তার (৪৫) ও আব্দুস সোবাহানের ছেলে সাদেক আলীকে (৩০)।
একইদিন দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা মা-মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ বলছে, পলাতক ৬ আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গ্রেফতারকৃত ২ জনকে সোমবার আদালতের সোর্পদ করা হবে। এদিকে খবর পেয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফরোজা নাজনীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে শেরপুর সদর উপজেলার বারঘরিয়া গ্রামের জনৈক গৃহবধূ তার কিশোরী (১৬) কন্যাকে সাথে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার পলাশিকুড়া গ্রামস্থ বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। এরপর শনিবার বেলা ১১টার দিকে তারা ইজিবাইকে শেরপুর শহরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। ওইসময় ওই গৃহবধূর ২ প্রতিবেশি ভাই মা-মেয়েকে সাথে নিয়ে ঘুরাফেরার কথা বলে সারাদিন নালিতাবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ঘুরাফেরা করে এবং রাতে পুনরায় পলাশিকুড়া গ্রামে নিয়ে যায়। পরে তাদের কৌশলে ঢাকায় বসবাসকারী জনৈক ওসমানের নির্মাণাধীন জনশূন্য এক নিভৃত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর স্থানীয় ৮ ব্যক্তি মিলে মা এবং মেয়েকে বাড়ির পৃথক স্থানে নিয়ে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
সকালে ধর্ষণের শিকার মা-মেয়ে পলাশিকুড়াস্থ বাড়ি ফিরে ঘটনা প্রকাশ করলে স্বজনেরা জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন। পরে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদলের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে সাত্তার ও সাদেক আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনায় ধর্ষিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল রবিবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে জানান, সকালে ৯৯৯ থেকে মেসেজ আসার সাথে সাথে আমরা মা-মেয়ে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযান চালিয়ে জড়িত ২ জনকে আটক করি। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে। ওই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের ও জেলা সদর হাসপাতালে ভুক্তভোগী মা-মেয়ের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।