নদী, বন, পাহাড় এক কথা বলা যায় প্রকৃতি অন্তঃপ্রাণ মন আমার। সময় সুযোগ পেলে চলে যাই প্রকৃতির সান্নিধ্যে। উপলব্ধি করি স্রষ্টার বিশালতা। বুঝার চেষ্টা করি সেই কারিগরকে যিনি এই প্রকৃতির কারিগর। মন ভালো রাখার মোক্ষম এক দাওয়াই হচ্ছে মাঝে মাঝে নিজেকে প্রকৃতির কোলে বিলিয়ে দেয়া।

এখন শরৎকাল। ধূপ আর শিউলি ফুলের গন্ধে হিন্দু বাড়িগুলো মঃমঃ করছে। কোন কোন বাড়ির আঙ্গিনায় সকালের শিউলি ফুল পরে, অপরূপ সৌন্দর্য বর্ধন করেছে। মণ্ডপে মণ্ডপে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা তৈরির কারিগর। এ ঋতুতেই দেবী দুর্গা আসবেন ধরাধামে। সকল কুৎসিত আর কুকর্ম কে বিনাশ করবেন দেবী দুর্গা।
অপর দিকে মহান স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টিকূলকে অপরূপ রূপে সাজাবেন এ ঋতুতেই। সুনীল আকাশে থাকবে সাদা মেঘের ভেলা। নদ-নদীর জলের রং হবে কাকচক্ষুর মতো স্বচ্ছ। কাশবনে সফেদ কাশফুল। নিলুয়া বাতাসে কাশফুলগুলো দুলবে। নদীর চরায় কৃষককূল ঘাম জড়াবে, দেখবে আগামীর স্বপ্ন।
বকবক অনেক হলো। নিচের ছবি নিয়ে কথা বলে শেষ করবো বকবক। ছবিটি ধারণ করেছি চরমুচারিয়া ইউনিয়নের মুন্সিরচর গ্রামের টান-কাছাড় থেকে। আমি যতবার এই টান-কাছাড়ে গিয়েছি ততবার এর রূপ, নবরূপে আমার সামনে হাজির হয়েছে।

চারদিকে আদিগন্ত ফসলের ক্ষেত, মাঝে মাঝে জলাধার। জলে জলচর পাখির আনাগোনা। ফসলের মাঠে ঘুঘু, ধানি তুলিকা, শালিক আর আকাশে চিল, ঈগল। হাজার হাজার পাকরা-শালিকের কলরবে মুখরিত টান-কাছাড়। শত শত চ্যাগা, টিটি আর বাটান যখন উড়ে যায় তখন যে রূপের সৃষ্টি হয় তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এক কথায় বলা যায় অবাক করা সৌন্দর্য। আমার চোখে যেটা সুন্দর অন্যের চোখে সেটা সুন্দর নাও হতে পারে। তবে শত মুখে বলবো স্রষ্টা তাঁর বিশাল সৌন্দর্যের এক টুকরো এখানে, এই টান-কাছাড়ে মেলে দিয়েছেন।
লেখক : পাখি ও প্রকৃতিপ্রেমী এবং সৌখিন আলোকচিত্রী, শেরপুর।