ads

রবিবার , ১১ এপ্রিল ২০২১ | ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

শেরপুরের গারো পাহাড়ে এবার বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ

জুবাইদুল ইসলাম
এপ্রিল ১১, ২০২১ ৭:১৯ অপরাহ্ণ

সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে উঠছেন অনেকেই

শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্তের গারো পাহাড়ে এবার বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলার ভারত সীমান্তঘেঁষা হলদিগ্রাম পাহাড়ি এলাকায় বেলে-দোআঁশ মাটিতে সম্প্রতি মাল্টা চাষে সাফল্যের পর এবার ১ একর জমিতে তরমুজের বাণিজ্যিক চাষ করেছেন আব্দুল বাতেন নামে এক স্থানীয় অধিবাসী যুবক। এতে স্বল্প খরচে তার ক্ষেতে ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। ফলে ওই এলাকায় উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তরমুজ চাষে। অন্যদিকে তার ওই বাণিজ্যিক তরমুজ চাষ তাক লাগিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসীসহ অনেককেই- যা ছুটির দিনগুলোতে ভ্রমণপিপাসু লোকজনের অনেকেই দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। অন্যদিকে লাভবান হওয়ার আশায় ওই তরমুজ চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছেন এলাকার অনেকেই। আগামী বছর একই এলাকায় তরমুজ চাষ অনেকটাই বাড়বে বলে ধারণা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

Shamol Bangla Ads

কৃষি বিভাগের মতে, গরম মৌসুমের সুস্বাদু ফল তরমুজ চরাঞ্চলের ফল বা ফসল হিসেবেই পরিচিত। এটা চরাঞ্চলের মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়ায় বেশ উপযোগী। কিন্তু পাহাড়ি মাটিতে এর ফলন সম্ভব নয় বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু সেই ধারণায় আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছেন শেরপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গাড়ি চালক ও ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদিগ্রাম পাহাড়ি এলাকার অধিবাসী আব্দুল বাতেন। তিনি গত বছর ডিসেম্বরে নিজ এলাকায় পাহাড়ি ১ একর জমিতে প্রায় ২ হাজার তরমুজের বীজ রোপণ করেন। বর্তমানে তার ক্ষেতে তরমুজের ফলন চোখে পড়ার মতো হয়েছে। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি ওই তরমুজ বিক্রির উপযোগী হবে। তরমুজের ক্ষেতের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে মাল্টা, লেবু, জাম্বুরাসহ আরও কয়েক প্রজাতির ফলের বাগান। এছাড়া সে বাগানের পাশেই পালন করা হয়েছে কিছু হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল। আর পুরো বাগানজুড়ে পল্লী বিদ্যুতের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকায় এবং পরিচর্যার পাশাপাশি নিরাপত্তাকাজে একটি আদিবাসী পরিবার সেখানে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। সরকারি চাকরির অফিস সময় শেষে এবং বন্ধের দিনগুলোতে আব্দুল বাতেন নিজেও ওই বাগানে অঢেল সময় দিয়ে থাকেন। কাজ করেন নিজের হাতে।
সরেজমিনে গেলে কথা হয় পাহাড়ি এলাকায় তরমুজ চাষের প্রথম উদ্যোক্তা আব্দুল বাতেনের সাথে। তার মতে, পাহাড়ি এলাকার আবহাওয়া ও মাটি চরাঞ্চলের মতো না হলেও কিছু মিল রয়েছে। তাই এখানে তরমুজ চাষ করা সম্ভব। শেরপুর সীমান্তের গারো পাহাড়ি এলাকায় বেশিরভাগ স্থানে পানিশূন্যতার কারণে ধান চাষ হয় না বললেই চলে। যেসব স্থানে চাষ হয়, সেখানে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। ফলে পানির খরচ দিয়ে ধান চাষে খুব লাভ নেই। এছাড়া কিছু স্থানে নানা সবজির চাষ হলেও খরচে পোষায় না তাদের। তাই আবদুল বাতেন এ এলাকার মানুষকে লাভজনক ও কম খরচে ওই তরমুজ চাষে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য নিজের জমিতে এবার বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ করেছেন। তিনি জানান, আমাদের এলাকার পাহাড়ি মাটি বেলে-দোআঁশ প্রকৃতির হওয়ায় আমি গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১৫টি ট্রপিক্যাল ড্রাগন প্রজাতির তরমুজের চারা রোপণ করে সাফল্য পেয়েছি। তাই এবার বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ করেছি। তবে ক্ষেতে কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার করেছি। ফলে এ চাষের তরমুজ বিষমুক্ত। এ তরমুজের ভেতরের রং টকটকে লাল ও রসালো এবং খেতে বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু। প্রতিটি তরমুজের ওজন ১৫ থেকে ১৮ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তিনি আরও বলেন, এবার আমার ২ হাজার গাছের পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। আশা করছি, এ তরমুজ গাছ থেকে আয় হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা। তরমুজের চারা বড় হয়ে ফলন আসা পর্যন্ত সামান্য পানি দিয়েছি। পাহাড়ি মাটির নিচে পানি না থাকলেও মাটির উপরিভাগে পানির স্তর থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়িনি। তবে ফলন আসার সময় কিছুটা পানি দিতে ও পরিচর্যা করতে হয়েছে। এ মাসের মাঝামাঝি তরমুজ উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করা যাবে। এছাড়া তিনি তার মাল্টা বাগানে সাথি ফসল হিসেবে কিছু তরমুজ গাছ রোপণ করেছেন। ফলে জমির স্বল্পতা কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করেন আবদুল বাতেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, আবদুল বাতেন এবার তার মিশ্র ফল বাগানের সঙ্গে এক একর জমিতে চরাঞ্চলের ফসল তরমুজ আবাদ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে তার খোঁজখবর নিচ্ছি এবং নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। তার মতো যেন অনাবাদি ওই পাহাড়ি জনপদে তরমুজ চাষ করে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানোর সুযোগ পায় আরও অনেকেই।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!