স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়সংলগ্ন সীমান্তবর্তী গজনী অবকাশ কেন্দ্রে শতবর্ষের পুরনো একটি বটগাছে যেন মৌমাছির মিলনমেলা চলে। শতবর্ষী ওই গাছটিতে মৌমাছিরা ৭২টি চাক বেঁধেছে। ওইসব মৌমাছি কেউ যেন কোনো ধরনের বিরক্ত না করে সেজন্য যথেষ্ট তৎপর অবকাশ কর্তৃপক্ষ। আর এ কারণে মৌমাছিরা এখানে আসা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।
ওই বটগাছের গোড়ার দিক থেকে শুরু করে গাছের সর্বশেষ চূড়ার ডালপালাগুলোতে চাক বেঁধে মৌমাছি নির্বিঘ্নে বসবাস করছে। তাই সীমান্তবর্তী শালগজারি শোভিত নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমির মাঝে বাড়তি আনন্দের খোরাক জোগাচ্ছে মৌচাকগুলো।
একসঙ্গে একই গাছে ৭২টি মৌচাক বর্তমান সময়ের একটি বিরল ঘটনা। সেই কারণে অনেক দর্শনার্থী গজনী অবকাশে বেড়াতে এসে ওই বটগাছের কাছে গিয়ে ক্ষণিকের জন্য থমকে দাঁড়ান এবং বিস্মিত হয়ে মৌচাকগুলো আগ্রহ ভরে দেখে আনন্দিত হন। গত কয়েক বছর ধরেই মৌমাছিগুলো ওই পুরনো বটগাছে চাক বাঁধছে বলে স্থানীয়রা জানান।
দর্শনার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, মৌচাকগুলোতে কোনো ঢিলাঢিলি নেই। সেজন্য নির্বিঘ্নে তারা বসবাস করছে। এটা দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার দর্শনার্থী আহসান হাবীব বলেন, অবকাশে বেড়াতে এসে দেখলাম একটি বটগাছে ৭২-৭৩টি মৌচাক। একটি গাছে এতগুলো চাক হতে পারে, তা কখনও ভাবতে পারিনি। এই প্রথম দেখলাম।
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক তামান্না মহল বলেন, ওই বটগাছে মৌচাক করা মৌমাছিগুলো ডাচ জাতের বন মৌমাছি। এরা সংঘবদ্ধভাবে একসঙ্গে এক স্থানে বসবাস করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এবং ভালোবাসে। এছাড়া গারো পাহাড়সংলগ্ন বনে এখন প্রচুর পাহাড়ি ফুল ও এদের খাবার রয়েছে। তাই ওই মৌমাছিরা আগামী বর্ষা আসার আগপর্যন্ত প্রায় ৬ মাস সেখানে থেকে পরে অন্যত্র চলে যাবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, একটি গাছে এতগুলো মৌচাক সচরাচর দেখা যায় না। বটগাছটিতে ৭০ থেকে ৭৫টি মৌচাক রয়েছে। এসব মৌচাক থেকে কেউ যেন মধু আহরণ এবং মৌমাছিদের বিরক্ত না করে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এসব মৌচাক ভ্রমণপিপাসুদের কাছে গজনী অবকাশ কেন্দ্রের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে।