গ্রেফতার ভাসুরের ৫ দিনের পুলিশ রিমাণ্ড মঞ্জুর
স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে নিজ বাসায় এক সেনাসদস্যের স্ত্রী সুরভী আক্তার হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার ৩ সপ্তাহ পরও উদঘাটন হয়নি রহস্য। এ নিয়ে ওই সেনাসদস্যের স্ত্রীর স্বজনসহ স্থানীয় সচেতন মহলে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। অন্যদিকে ২৮ অক্টোবর বুধবার দুপুরে নাজমুল হুদা (৩৮) নামে সুরভীর আপন এক ভাসুরের ৫ দিনের পুলিশ রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তদন্ত কর্মকর্তার ৭ দিনের পুলিশ রিমাণ্ডের এবং আসামিপক্ষে জামিন আবেদনের বিষয়ে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহসিনা হোসেন তুষি তার জামিন নাকচ করে ওই রিমাণ্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার শহীদুল হক। এর আগে ২১ অক্টোবর রাতে শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের লঙ্গরপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে স্থানীয় আব্দুল হালিমের ছেলে।
এ বিষয়ে ওই চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (জামালপুর-শেরপুর) অঞ্চলের পিবিআইয়ের পরিদর্শক হারুনুর রশিদ জানান, রিমাণ্ড মঞ্জুর হওয়া আসামি নাজমুল হুদাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার পিবিআই হেফাজতে নেওয়া হবে। তিনি প্রাথমিক তদন্তের প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে জানান, ডিসিষ্ট সুরভীর বিবাহের পর থেকে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে তার আপন ভাসুর নাজমুল হুদার শত্রুতা ছিল। এছাড়া সুদানে জাতিসংঘ মিশনে থাকা সেনাসদস্য নাজিম উদ্দিন কসবা মোল্লাপাড়ার বাসা-বাড়ি ও জমি স্ত্রী সুরভীর নামে দলিল করে দেওয়ায় এবং ওই বাসাতে বসবাসের সুযোগ না দেওয়ার কারণেও সুরভীর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল সন্ধিগ্ধ আসামি নাজমুল হুদা। যে কারণে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, ওইসব কারণেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হতে পারে। তার মতে, তাকে রিমাণ্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্তকরণসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর শহরের কসবা মোল্লাপাড়া এলাকার নিজ বাসার উঠান থেকে সেনাসদস্যের স্ত্রী ও ২ সন্তানের জননী সুরভী আক্তারের (৩০) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইসময় বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া গেলেও সুরভীর হাতে থাকা মোবাইল ও গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন এবং বাড়ির কোন জিনিস খোয়া যায়নি। সুরভী সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের শফিউল্লাহর মেয়ে এবং সেনা সদস্য নাজিম আহমেদের স্ত্রী। পরদিন নিহতের বাবা বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্তের ভার গ্রহণ করে। এরপর র্যাব-১৪ (জামালপুর-শেরপুর) অঞ্চলের কর্মকর্তারা ছায়া তদন্তকালে সুরভীর বাসার আশেপাশের বেশ কয়েকজনকে আটক করলেও পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি মামলাটি তদন্তের ভার অর্পিত হয় পিবিআইয়ের উপর।