স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট এরশাদ আলী লিটনের করা সম্মেলনের প্রতিবাদে এবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে খাঁ গোষ্ঠীর লোকজন। ২৪ আগস্ট সোমবার দুপুরে শহরের মাধবপুরস্থ শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের হেরুয়া তালুকপাড়া এলাকার খাঁ গোষ্ঠীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আব্দুর রহিম খান।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রহিম খান অভিযোগ করে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবত রাজনীতি করেন এবং স্থানীয় চরশেরপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি। কিন্তু কিছুদিন হয় স্থানীয় সরকার গোষ্ঠীর সদস্য ও নবীন আইনজীবী এরশাদ আলী লিটনের রোষানলে পড়েছেন তিনি, তার পরিবার ও খাঁ গোষ্ঠীর লোকজনসহ স্থানীয় নিরীহ লোকজন। ইতোমধ্যে তার ছেলে রশিদুল হাসান খান রিটু ও তাকেসহ বেশ কয়েকজনকে মিথ্যা মামলায় হাজত খাটতে হয়েছে। ছেলে রিটুকে অন্যায়ভাবে পথ আটকিয়ে বেধড়ক মারপিটের পরও মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনও সে কারাগারে বন্দি। তার মতে, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় নিরীহ-নিরপরাধ মানুষকে হয়রানী করে পরিবেশকে অশান্ত করে তোলা হয়েছে। ওই আইনজীবী স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব মানিক ও সদস্য সাদা মিয়া ও তার স্ত্রী মোরশেদাসহ বিভিন্নজনকে হয়রানী করেছেন।
তিনি কথায় কথায় মিথ্যা মামলার হুমকি দেন। এজন্য এলাকাতে কেউ ভয়ে কথা বলে না। অথচ ওই ঘটনাকে আড়াল করতে ২৩ আগস্ট রবিবার সরকার গোষ্ঠীর তরফ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এলাকার প্রবীণ শিক্ষাবিদ নাসির উদ্দিন খাঁসহ তাদের বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতা এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে কামারুজ্জামানের ফাসি কার্যকরের পর এলাকায় গায়েবী জানাজা অনুষ্ঠানের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তিনি ওইসব অভিযোগ অস্বীকার করে তা সরকার গোষ্ঠীর মিথ্যাচার বলে দাবি করেন এবং উল্লাপাড়া উপজেলায় কর্মরত এসি (ল্যাণ্ড) নাহিদ হাসান খানের প্রতি হিংসার বশবর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে মানহানি-আপত্তিকর ও মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করে বস্তুত ওই বিষয়ে তার বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও দাবি করা হয়। সেইসাথে তিনি নিজ পুত্র রশিদুল হাসান খান রিটুকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বর্তমান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং প্রবীণ ব্যক্তি নাছির উদ্দিন খাঁর ছেলে নাহিদ হাসান খানকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মী বলে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্য প্রত্যাখানের পাশাপাশি ওই বিষয়ের প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব মানিক খান, ব্যবসায়ী মাকছুদুর রহমান খান, হাজতবাসে থাকা রিটুর স্ত্রী শিমু আক্তার, সাদা মিয়ার স্ত্রী মোরশেদা বেগমসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এলাকায় সংঘটিত এক ঘটনার প্রেক্ষিতে দায়ের করা মামলা বাদীপক্ষে পরিচালনার করার কারণে নিজের উপর হামলা, প্রাণনাশের হুমকি এবং বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ তুলে আব্দুর রহিম খাঁ ও তার ছেলে রশিদুল হাসান খান রিটুসহ পরপর দু’টি মামলা দায়ের করেন আইনজীবী এরশাদ আলী লিটন। আর ওইসব ঘটনার প্রতিবাদে ন্যায়বিচার দাবি করে ২৩ আগস্ট শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন এডভোকেট এরশাদ আলী লিটন।