নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ১২ বছর বয়সী পিতৃহারা এতিম এক কিশোরীকে বিয়ে করার প্রস্তুতির সময় বর ও তার বড় ভাইকে আটক করে শ্রীঘরে পাঠিয়েছে ভ্রাম্যমণন আদালত। ৪ জুন বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গোজাকুড়া কয়ারপাড় গ্রামে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে চতুর্থ বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল দেলোয়ার হোসেন (৪০)। বিয়ের বরযাত্রী হিসেবে সাথে ছিল তার বড় ভাই আন্তাজ আলী (৫০)। ওইসময় প্রশাসনিক বাধার মুখে দেলোয়ারের চতুর্থ বিয়ে করার পরিবর্তে যেতে হয় শ্রীঘরে। প্রশাসন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বরের ১ বছর দশ মাস ও তার ভাইয়ের ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দনগর গ্রামের মৃত আব্দুল হাই এর ছেলে কাঁচামাল ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন এ যাবত ৩টি বিয়ে করার পর সবার সাথেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে চতূর্থ বিয়ে করার জন্য গোজাকুড়া কয়ারপাড় গ্রামের পিতৃহারা ১২ বছর বয়সী এক দরিদ্র কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য ওই কিশোরীর মা ও নানীকে বিয়ে করতে রাজী করায় বিয়ে পাগল দেলোয়ার। এরপর নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কনের বাড়িতে যায় বর দেলোয়ার ও তার বড় ভাই আন্তাজ আলী। যথারীতি কাজি ডেকে সাদা কাগজে কাবিনও করে ফেলে। এমতাবস্থায় থানা পুলিশ খবর পেয়ে বিয়েতে বাঁধা দেয়।
পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বর দেলোয়ারকে ১ বছর দশ মাস ও বড় ভাই আন্তাজ আলীকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। তবে কাজীসহ কিশোরীর পরিবারের সবাই পালিয়ে যাওয়ায় তাদের শাস্তির আওতায় আনা যায়নি।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান জানান, দেলোয়ারের চতুর্থ বিয়ের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে অভিযুক্ত বর ও তার ভাইকে দণ্ডাদেশ দিয়ে রাতেই দণ্ডপ্রাপ্তদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।