স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটির আওতায় সারাদেশে বিচার অঙ্গণও বন্ধ থাকায় মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারক, আইনজীবী, পুলিশসহ আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থী মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০২০’ জারির প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত চলছে ভার্চুয়াল শুনানী। এ নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সফটওয়্যার ব্যবহারে জটিলতা ও কিছু আইনজীবীদের প্রযুক্তিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে কিছু জটিলতা দেখা দিলেও পরিবর্তিত অবস্থায় এসেছে সফলতা। আর এ সবকিছু নিয়ে ইউনাইটেড ভয়েস বাংলাদেশ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ভার্চুয়াল কোর্ট : সম্ভাবনা ও প্রায়োগিক সমস্যা’ শীর্ষক অনলাইন টকশো।
২৮ মে বৃহস্পতিবার রাতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আওরঙ্গজেব আকন্দের সঞ্চালনায় ওই টকশোতে অংশ নেন শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার এবং সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট এআরএম কামরুজ্জামান কাকন ও এডভোকেট খাদিজাতুল কোবরা বাপ্পী। ওইসময় তারা ‘আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহ্রা অধ্যাদেশ-২০২০’ কে চলমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি ঐতিহাসিক, সময়োপযোগী ও কালজয়ী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন। সেইসাথে তারা ওই অধ্যাদেশের কিছু অস্পষ্টতা তুলে ধরে তা পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকরে বিচারক ও আইনজীবীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের দ্রুত প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় বারগুলোকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণসহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। আর সফটওয়্যার ব্যবহারে জটিলতা ও কিছু আইনজীবীদের প্রযুক্তিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির আলোকে শেরপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম হুমায়ুন কবীরের কার্যকর উদ্যোগ, বিচারক ও আইনজীবীসহ আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বল্প পরিসরে হলেও দ্রুত প্রশিক্ষণ প্রদানে বিশাল সফলতা এসেছে এবং ইতোমধ্যে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে শেরপুর একটি অন্যতম মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্থানীয় বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার। আর ওই দৃষ্টান্তে টকশোতে অংশ নেওয়া অন্য ২ আইনজীবীসহ সঞ্চালকও ভূয়সী প্রশংসা করেন শেরপুরের মডেল নিয়ে।
এছাড়া তারা তাদের পেশাগত জীবনে তৃপ্তি দেয় এমন ঘটনার পাশাপাশি মানবাধিকার বা মানবিকতা রক্ষায় তাদের অবদান আছে, এমনতর কিছু ঘটনাও তুলে ধরেন। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিতে লঘু দণ্ডের অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক বিবেচনার বিতর্ক প্রসঙ্গে তারা বলেন, মূলতঃ ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত মেয়াদে দণ্ডিত তথা যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ বা ৩ ধারা, মাদক, ইভটিজিং বা ভ্রাম্যমাণ আদালতে লঘু অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের সাজার মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, তাদের অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিতর্কের কোন সুযোগ নেই।