শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়াসিম আকরামের পরিচয় সেই ১৯৮৮ সালে। সেবার এশিয়া কাপে খেলতে এসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ঘুরে যান তিনি। সেই থেকে ২০০২ পর্যন্ত এ দেশের মাটিতে আট ওয়ানডে ও দুই টেস্ট খেলেছেন পাকিস্তান কিংবদন্তি। ওয়াসিম ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা হ্যাটট্রিকটি করেন বাংলাদেশেই। তার এ কীর্তিতে ১৯৯৯ সালে এখানে অনুষ্ঠিত এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়শিপ জেতে পাকিস্তান। লাল-সবুজের দেশে আট ওয়ানডেতে ১২ উইকেট এবং দুই টেস্টে ৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
ক্যারিয়ারে সেরা ফর্মে থাকতে ইংলিশ কাউন্টি লিগে নামমাত্র দর্শকের সামনে খেলে বাংলাদেশে আসেন ওয়াসিম আকরাম। এসে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক দেখে বিস্মিত হন তিনি। এ দেশে এখনও আসা-যাওয়া আছে তার। ধারাভাষ্য দিতে বহুবার এখানে পা রেখেছেন সুইং অব সুলতান।
তবে ১৯৯৫ সালে আবাহনীর হয়ে খেলতে এসে সেই বিস্ময়ভরা চোখের কথাই তামিম ইকবালের ফেসবুক লাইভে শোনালেন ওয়াসিম। তিনি বলেন, সেবার আবাহনীর হয়ে ঢাকায় খেলতে আসি আমি। প্রথম ম্যাচে আকরাম খান আমার সঙ্গে খেলেছে। সেই গেমে মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ-আবেগ দেখে আমি অবাক হয়েছি। এ দেশে দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়ামে উৎসাহী দর্শকদের সামনে ক্রিকেট খেলার কথা অন্য ক্রিকেটারদের মুখে শুনেছি। তবে এত দর্শক হবে তা সত্যিই ভাবিনি।
বাংলাদেশের প্রকৃতি, এখানকার মানুষের খাদ্যাভ্যাস-আতিথ্য অসাধারণ। যে কারণে ওয়াসিমের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে সেগুলো। এখনও এ দেশের মাছের ঝোল মিস করেন তিনি।
১৯৯২ বিশ্বকাপজয়ী পাক তারকা বলেন, আমার প্রিয় একটি জায়গা– বাংলাদেশ। যখনই গিয়েছি দেশটি ঘুরে দেখতে চেয়েছি আমি। এখানকার মনোরম প্রকৃতি, সুস্বাদু খাবার, সুমিষ্ট আচরণের মানুষকে দেখেছি। আমি আজও এ দেশের মাছের ঝোল মিস করি। বাংলাদেশ আমার হৃদয়ে।
পরে ক্রিকেট প্রসঙ্গে ফেরেন ওয়াসিম। গেল ১০-১২ বছরে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে বাংলাদেশ বলে জানান তিনি। পাকিস্তানি বাঁহাতি পেস লিজেন্ড বলেন, সময়ে ক্রিকেটে টাইগারদের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। তামিম, সাকিব, মোস্তাফিজের মতো ক্রিকেটার পেয়েছে। বাংলাদেশের ফিল্ডিং এখন অনেক উঁচুমানের। যথারীতি মঙ্গলবার রাতে লাইভ সেশন করেন তামিম। এতে আড্ডা দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক তিন ক্রিকেটার– আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও খালেদ মাসুদ পাইলট। তাদের আলোচনার মধ্যে বিশেষ অতিথি হয়ে আসেন ওয়াসিম। এ সময় ভালো ফাস্ট বোলার হতে গেলে কী করতে হবে, তরুণদের সেই দিক বাতলে দেন তিনি।
ওয়াসিম বলেন, ১৬ বছরের একজন তরুণের মধ্যে অনেক প্রতিভা লুকিয়ে থাকে। তাকে যথাযথভাবে পরিচর্যা করতে হবে। তার ইনজুরির শঙ্কাটা বেশি থাকে। কারণ সে বেড়ে উঠছে। সে জন্যই সতর্ক থাকতে হয়। ওকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। নেতিবাচক মানসিকতা পরিহার করতে হবে। বাংলাদেশের পিচ স্লো, উইকেট পাওয়া যাবে না– এসব ভাবলে হবে না। মনে রাখতে হবে, পাকিস্তান আর এখানকার পিচ একই। আমরা কিন্তু ঠিকই উইকেট পাই।