শ্যামলবাংলা ডেস্ক : করোনায় সব বয়সী আক্রান্ত হলেও বয়স্কদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে যাদের নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা যেমন-ডায়াবেটিস, হৃদরোগ আছে তারা বেশি বিপদের আশঙ্কায় রয়েছেন। এছাড়া বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তাদের নিয়ে বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। একটানা বাড়িতে থাকতে থাকতে তাদেরও মনের উপর চাপ পড়ে। এজন্য শরীরের পাশাপাশি তাদের মনের ক্ষেত্রটিতেও সমান যত্ন প্রয়োজন। বাড়িতে বয়স্ক মানুষ থাকলে তাদের শারীরিক ও মানসিক যত্ন নিতে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন।
শারীরিক যত্ন –
১. বয়স্করা ওষুধপত্র সময়মতো খাচ্ছেন কি না খোঁজ রাখুন। প্রয়োজনে তাদের ওষুধের ডোজ বাড়া-কমা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।
২.হাড়ের সমস্যা না থাকলে বা চিকিৎসকের নিষেধাজ্ঞা না থাকলে বয়স্করা ছাদে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। শরীর ভালো রাখতে হালকা কিছু ব্যায়ামও করতে পারেন।
৩. বাড়ি অন্য সদস্যদের মতো বয়স্কদেরও ঘন ঘন হাত ধোওয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করা জরুরি।
৪. ছাদে বা বাড়ির সামনে কোনও ফাঁকা জায়গায় দাঁড়ালেও মাস্ক ব্যবহার করো উচিত বয়স্কদের। এ সময় গায়ে রোদ লাগানো খুবই জরুরি। তাই বয়স্কদের ঘরে জানালা দিয়ে রোদ আসলে সেটা খুলে দিন।
৫. অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম দুটিই খারাপ বয়স্কদের জন্য। তাই তাদের যাতে অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা, কোনওটাই যেন না লেগে যায় তা খেয়াল রাখতে হবে।
৬. গোসলের সময় বয়স্কদের নিয়মিত গরম পানি ব্যবহার নিশ্চিত করুন। তাদের খাবার রান্নায় আদা-দারুচিনি-হলুদের মতো মশলা— যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে সে সব ব্যবহার করুন। আদা, গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, কাঁচা হলুদ ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে লেবু মিশিয়ে চায়ের মতো খাওয়াতে পারেন।
৭. তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় উপাদান ও চিকিৎসকের ফোন নম্বর হাতের কাছেই রাখুন। দীর্ঘমেয়াদি কোনও অসুখ থাকলে তার চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।
বয়স্কদের মন ভালো রাখতে যা করণীয়-
১. তারা যাদের সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করেন ফোনে বা ভিডিও কলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা বলান। প্রয়োজনে অনেকে মিলে অনলাইনে আড্ডাও দিতে পারেন। বয়স্ক সদস্যরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ না হলে তাকে সাহায্য করুন।
২. ভাল বই পড়া, গান শোনা বা গাছের পরিচর্যা করার মধ্যেও বয়স্করা আনন্দ পান। সে সব উপাদানের যাতে অভাব না হয় সে দিকে নজর রাখতে হবে।
৩. বাড়ির সবচেয়ে ছোট সদস্যকে বয়স্ক মানুষটার কাছে যেতে দিন। আটকা সময়ে তাদের দুজনের সঙ্গ দুজনের মনের চাপ কমাবে।
৪. এমন কোনও কাজ করবেন না, যাতে বয়স্ক মানুষটি মনে দুঃখ পান। যেমন, সময় কাটানোর জন্য অনেক বয়স্ক মানুষই টিভি দেখেন। বয়স্ক মানুষটি তার পছন্দের অনুষ্ঠান দেখার সময় টিভির চ্যানেল বদলে দেবেন না। এতে তিনি নিজেকে গুরুত্বহীন বলে ভাবতে পারেন।
৫. বাড়ির বয়স্ক সদস্যর খাওয়া-গোসল-ওষুধ খাওয়া এ সব কাজ যেন সময়মতো হয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন।
৬. নিজেরাও বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে সময় কাটান। তার শরীর ভাল থাকলে তাকেও হালকা কিছু কাজের দায়িত্ব দিন। এতেও তার মন ভালো থাকবে।