ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতার মধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ১০ জন আহত হয়েছে। ৪ মে সোমবার রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বাতিয়াগাঁও গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে । এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানায় যুবলীগ নেতার পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ত্রাণ বিতরণের জন্য যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইউপি সদস্যদের নামের তালিকা দিতেন। কিন্তু পুরো নামের তালিকায় ত্রাণ দিতে না পারায় ইউপি সদস্যদের সাথে জাহিদুলের মতবিরোধ চলে আসছিল। এমতাবস্থায় ২০ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মিনারা বেগম ৩৩ জনের মধ্যে ৫ কেজি করে চাল ১টি সাবান বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে যান। বিতরণ শেষে ৫ জনের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ সম্ভব হয়নি। ওই ২৫ কেজি চাল তার নিজ বাড়িতে নিয়ে রাখেন মিনারা বেগম। পরদিন তা বিতরণ করা হবে। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন তোতাকেও জানানো হয় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান। উক্ত চাল রাখার বিষয়কে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জাহিদুল হক ও তার লোকজন মহিলা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ এনে এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এক পর্যায়ে বিষয়টি তারা উপজেলা প্রশাসনকেও অবহিত করেন। ২১ এপ্রিল ওই চাল বিতরণের পূর্বেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ মিনারা বেগমের বাড়িতে এসে ওই ২৫ কেজি চালসহ তাকে গ্রেফতার করে। ওই বিষয়ে দুদুকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মিনারা বেগম জেল হাজতে রয়েছে। ওই ঘটনার পর জাহিদুল হক ৫৬ জনের একটি ত্রাণের নামের তালিকা দেন ইউপি সদস্য চাঁন মিয়ার কাছে।
চাঁন মিয়া জানান, তার দাবি অনুযায়ী ত্রাণ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে গত শনিবার রাতে জাহিদুল হকের লোকজন তাকে লাঞ্চিত করে। একপর্যায়ে চাঁন মিয়া দৌঁড়ে তাদের বাড়িতে আসে। ওইসময় ইউপি সদস্য চাঁন মিয়ার লোকজন জাহিদুলের লোকজনকে ধাওয়া করে। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরদিন জাহিদুলের লোকেরা তাদের বাড়ির সামনে ইউপি সদস্যসের লোকদের ৩টি দোকান বন্ধ করে দেয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত ৯টার দিকে দু’গ্রুপের মধ্যে আবারও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় গ্রুপের ১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে জাহিদুলের চাচাতো ভাই আব্দুল মজিদ (৩৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও উভয় গ্রুপের অন্যান্যদের শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।যুবলীগ নেতা জাহিদুল হক বলেন, চাল চুরির ঘটনায় মিনারা বেগম হাজতে থাকায় তারা আমাদের লোকদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। ত্রাণের নামের তালিকা দেয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ ব্যাপারে ৫ মে মঙ্গলবার রাতে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সরোয়ার হোসেন বলেন, থানায় মামলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ দিকে ঘটনার পর থেকে উভয় গ্রুপের লোকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।