স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমার ক্ষেতের ধান পেকে গেছে আর্থিক অনটনের জন্য কাটতে পারছিলাম না। পরে পুলিশের সহযোগীতা চাইলে তারা এসে আমার ধান কেটে দিয়েছে। এতে আমি খুব খুশি। ক্ষেতের পাকা ধান পুলিশ সদস্যরা কেটে দেওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এভাবেই নিজের অনুভুতি প্রকাশ করেন নন্নী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল জলিল। শেরপুরে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ ৬ মে বুধবার ওই কৃকের ৫০ শতক জমির বোরো ধান কেটে দিয়েছে। কেবল ওই কৃষকই নয়। পাশের দরিদ্র কৃষক নূর ইসলামের ৩৫ শতক জমির ধানও এদিন কেটে দেয় পুলিশ সদস্যরা। কৃষক নুর ইসলাম বলেন, আমার ধান কাটা শ্রমিকের টাকা নেই। তাই আমি একা একা ধান কাটতে পারছিলাম না। পাশের ক্ষেতে ধান কাটতে সময় পুলিশ ভাইদের বলা ছাড়াই তারা এসে আমাকে সহযোগীতা করে আমার ধানও কেটে দিয়েছে।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, ‘মানবিক পুলিশের চোঁখে জনতার আকাঙ্খা লেখা থাকে, আমরা আছি কৃষকের পাশে’ এ শ্লোগানে আমরা কৃষকের ধানকাটা সহ এই করোনাকালে নানা কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএমের নির্দেশনায় ২৫ জন পুলিশ সদস্য ও স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের ৪০ জন সদস্য নিয়ে প্রথমে কৃষক আব্দুল জলিলের ৫০ শতাংশ জমির ধান কেটে দেই। পরে দেখি পাশ্ববর্তী আরেক ক্ষেতে এক কৃষক একাই ধান কাটছে। তাকেও আমরা সকলেই সহযোগীতা করে ৩৫ শতাংশ জমির ধান কেটে দিয়েছি। জেলা পরিষদের সদস্য ও নালিতাবাড়ী কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. বিল্লাল হোসেন চৌধুরী বলেন, এলাকার সাংসদ ও সাবকে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর পরামর্শক্রমে আমাদের স্টুডেন্ট কমিউনিটি ফেরামের সদস্যদের নিয়ে আমারা প্রান্তিক ও শারীরিকভাবে অক্ষম কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছি। এমন কৃষক যদি আমাদের সাথে যোগাযোগ করে তাহলে তাদের ধানও আমরা কেটে দিব।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে এখন লকডাউন চলছে। এদিকে কৃষকের বোরো ধানও পেকে ওঠেছে। তাই দেশে যাতে খাদ্য ঘাটতি না হয় সেজন্য কৃষকের ধান আমরা কেটে দিয়ে সহযোগীতা করছি। জেলা পুলিশ অস্বচ্ছল, গরীব ও প্রান্তিক কৃষকের পাশে আছে, তারা যাতে তাদের কষ্টার্জিত সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারে।