স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ঘটনার ৭২ ঘন্টার মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীতে চাঞ্চল্যকর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম (২৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যার মূল ঘাতক মোঃ আশিকুজ্জামান আশিক (২৭)কে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ পুলিশ। ৩ মে রবিবার বিকেলে নগরীর আকুয়া বোর্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে ৪ এপ্রিল সকালে হত্যাকাণ্ডের সময় পরিহিত রক্তমাখা প্যান্ট এবং গেঞ্জি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এমসি বাজার হতে এবং পুকুর থেকে রড উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওই তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান। আসামি জানায়, মোবাইল চুরি করতে গিয়ে তাকে হত্যা করেছে। আশিক একজন এলাকার পেশাদার চোর ও মাদক সেবী।
লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার জানান, গত এপ্রিল ময়মনসিংহ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার জনৈক সোলায়মান সাহেবের বাসার ভাড়াটিয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম (২৫) ভোর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তি কর্তৃক আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে মৃত্যুবরণ করে। এ বিষয়ে নিহত ভিকটিমের পিতা মোঃ সাইকুল ইসলাম এর গত ১ এপ্রিল অভিযোগের ভিত্তিতে কোতোয়ালী থানার ৩০২ ধারায় মামলা নং-০২, রুজু করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভিকটিম তৌহিদ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিল। তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জেলার গোয়েন্দা শাখা এবং থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন এবং পুলিশ সুপার নিজে ব্যক্তিগতভাবে মামলাটি তদারকী করেন। তিনি আরো বলেন প্রাথমিকভাবে সংঘটিত ঘটনাটি চুরি সংক্রান্ত প্রতীয়মান হওয়ায় ডিবি এবং থানা পুলিশ যৌথ অভিযানের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যার মূল ঘাতক মোঃ আশিকুজ্জামান আশিক (২৭) গ্রেফতার করে। আশিকুজ্জামান আশিক পিতা মৃত-সোহেল মিয়া, সে নগরীর ১৯২, গোহাইলককান্দি (জামতলামোড়), সেকান্দর মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকতো। ঘটনার ২ দিন আগে ভিকটিম তৌহিদের সাথে তার ভাড়াটিয়া বাসার গলি রাস্তাার মাথায় রমজান মাসে সিগারেট খাওয়া নিয়ে ভিকটিম তার মোবাইল হাতে নিয়ে শ্বাসাইতে থাকে এবং উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। তখন থেকেই সে মোবাইলটি নেওয়ার জন্য আশিকের লোভ হয়। ভিকটিম বাসায় গেলে সে পিছনে পিছনে বাসায় গিয়ে তার রুম দেখে আসে। ঘটনার দিন রাত অনুমান ৩টার দিকে সে বাসার ছাদ দিয়ে মোবাইল চুরি করতে আসলে ভিকটিম তাকে ধরে ফেলে। উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পাশে থাকা রড দিয়ে ভিকটিমকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। পরে তৌহিদকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপতালে নিয়ে গেলে সে মারা যায়। তৌহিদুল ইসলাম খান (২৫) নেত্রকোণা জেলা আটপাড়া থানার রামেশ্বরপুর গ্রামের মোঃ সাইকুল ইসলাম এর পুত্র।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর, মোঃ শাহজাহান, আল আমিন, ওসি কোতোয়ালি মাহমুদুল ইসলাম, ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।