স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বিস্তার প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে শেরপুরে এবার প্রশাসনের সাথে মাঠে নেমেছে ‘ইমার্জেন্সি স্বেচ্ছাসেবী সাপোর্ট টিম’। ২ মে শনিবার সকাল থেকে মাঠে নামা ওই টিম গঠিত হয়েছে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, শেরপুর পৌরসভা, রেড ক্রিসেন্ট, কমিউনিটি পুলিশিং স্টুডেন্ট ফোরাম, শেরপুর জেলা ছাত্রলীগ, বিডি ক্লীন, শেরপুর গ্র্যাজুয়েট ক্লাব, রক্তসৈনিক শেরপুর, সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরাম, শেরপুর রক্তদান সংস্থা এর সমন্বয়ে। অন্যদিকে লকডাউন কার্যকরসহ বাজার মনিটরিংএ বাড়ানো হয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের তৎপরতা।
জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুবের নির্দেশনা মোতাবেক ওই ‘ইমার্জেন্সি স্বেচ্ছাসেবী সাপোর্ট টিম’ শনিবার সকাল ৮টা থেকে শেরপুর জেলা শহরের খোয়াড়পাড়, সোনারবাংলা বাসস্ট্যান্ড, চাপাতলী মোড়, শেরী ব্রিজ, অষ্টমীতলা মোড়, নির্বাচন অফিস, থানামোড়, নিউমার্কেট মোড়, বাগবাড়ী মোড়, বটতলা, নবীনগর বাসস্ট্যান্ড, সজবরখিলা, ট্রাকস্ট্যান্ড, কলেজ মোড়সহ ১৪টি পয়েন্টে ওই টিমের সদস্যরা একযোগে কাজ করতে মাঠে নামে। তারা পর্যায়ক্রমিকভাবে যথাযথভাবে লকডাউন প্রতিপালনে জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসা সেবা, খাদ্য সরবরাহ, কৃষিপণ্য সরবরাহ, কৃষিকাজে নিয়োজিত ব্যতীত সকল ধরনের গণপরিবহন, সিএনজি, ইজিবাইক ও অবৈধ যানবাহনের চলাচল বন্ধ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে তদারকি, লকডাউন ঘোষিত শেরপুর জেলায় অন্য জেলা থেকে আগমণ প্রতিরোধ করা ও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে কাজ করে।
এতে অন্যান্য দিনের চেয়ে ওই টিমের প্রথম কর্মদিবসেই পাল্টে যায় শহরের চিত্র। মানুষের অবাধ যাতায়াত ও ইজিবাইক, রিক্সাসহ হালকা যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পাশাপাশি কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান-পাঠ ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় খোদ শহরে প্রভাব পড়ে লকডাউনের।
এদিকে বৃহস্পতিবার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনার কলি মাহবুবের নির্দেশনায় করোনা হতে সৃষ্ট দুর্যোগে জেলার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট নমিনা দের নেতৃত্বে জেলাব্যাপি ৫০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সয়ং জেলা শহরে পরিচালিত অভিযানে অংশ নেন। তার সাথে আরও অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তোফায়েল আহমেদসহ জেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ অভিযানে অংশ নেন। ওইসব অভিযানে সামাজিক দূরত্ব পালনের নির্দেশ অমান্য করে সংক্রামক রোগ বিস্তারে ঝুঁকি সৃষ্টি করায় সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর আওতায় ২টি মামলায় ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে জনগণকে সচেতন করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবিএম এহসানুল মামুন বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। এ জন্য জেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নিয়মিত টহল দিচ্ছেন সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশ। এবার জেলা প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ‘ইমার্জেন্সি স্বেচ্ছাসেবী সাপোর্ট টিম’। তিনি বলেন, কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের কারনে করোনা ভাইরাস দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাচ্ছে ব্যাপকভাবে। তাই জেলায় করোনার প্রকোপ কমাতে সকলের সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার কোন বিকল্প নেই।