শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ শেরপুরের শ্রীবরদীতে দুলাভাইর বাড়ি থেকে সুখী বেগম (১৭) নামে এক শ্যালিকার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৫ এপ্রিল শনিবার দুপুরে উপজেলার ভায়াডাঙ্গা এলাকার আসন্দিপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত সুখী বেগম পার্শ^বর্তী বকশীগঞ্জ উপজেলার কাছিমেরচর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমদ্দিন ফকিরের মেয়ে। ওই ঘটনায় দুলাভাই সালাত মিয়া (৩০) সহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের ভায়াডাঙ্গা আসন্দিপাড়া গ্রামের শাজাহান মিয়ার ছেলে সালাত মিয়া প্রায় ১০ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বকশিগঞ্জ উপজেলার কাছিমেরচর গ্রামের জয়নাল ফকিরের মেয়ে রিমাকে বিয়ে করে। এরপর থেকে সালাত মিয়া রিমাকে ঘরে রেখেই তার ছোট বোন তানজিনার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ওই শালিকার একটি পুত্র সন্তান হয়। পরে তানজিনা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। পরে সে রিমার আরেক ছোট বোন সুখীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে দু’বোনের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। প্রায় এক সপ্তাহ আগে স্থানীয় মাতাব্বররা গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে তাদের দু’বোনকেই বাপের বাড়িতে পাঠায়। পরে সালাত মিয়া শ্¦শুর বাড়ি থেকে শালিকা সুখীকে নিয়ে আসে বাড়িতে। গত তিনদিন আগে রিমাও আসে সালাত মিয়ার বাড়িতে। এ নিয়ে তাদের স্বামী. স্ত্রী. শ্বাশুরি ফুলেছা বেগম ও সালাত মিয়ার পার্শ্ববর্তী বাড়ি ও খালাতো বোন ফকির মিয়ার মেয়ে শান্তি বেগমের ঝগড়া হয়। শনিবার দুপুরে খবর পেয়ে সালাত মিয়ার বাড়ির ঘরের বিছানা থেকে সুখীর লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোত্তাকিন মিয়া জানান, সালাত মিয়া দিন মজুরির কাজ করতো। মাঝে মধ্যে ঢাকায় গিয়ে সে অটোবাইক চালাতো। কয়েকদিন যাবত তার শ্যালিকাকে নিয়ে তার স্ত্রী ও খালাতো বোনদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে গ্রাম্য শালিস হয়েছে। পরে তাদেরকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় সুখীর বড়বোন রিমা জানায়, তার স্বামীর সাথে তার ছোট বোনের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। আজ দুপুরে সে একাই গলায় রশি বেঁধে আত্মহত্যা করে। পরে তারা দেখতে পেয়ে লাশ বিছানায় নামিয়ে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে বলে স্বীকার করে রিমা।
ওই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার জানান, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুলাভাই সালাত মিয়া, তার মা ফুলেছা বেগম ও খালাতো বোন শান্তি বেগমকে আটক করা হয়েছে।ওই ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।