শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-২০ এর ভিডিও বৈঠক শেষ মুহূর্তে এসে বাতিল হয়ে গেছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে বিবাদ শুরু হয়েছে, সে কারণেই বৈঠকটি বাতিল হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। শুক্রবার বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। তাতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে খুব শিগগির হয়তো বৈঠকটি ফের আয়োজন করা হতে পারে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে ‘দয়িত্বে অবহেলার’ অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। সংস্থাটির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে চায় ওয়াশিংটন। তবে চীন তদন্তের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে একেবারেই অনিচ্ছুক। এ কারণেই শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি বাতিল হয়ে যায়। বৈঠক আয়োজনের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিষয়টি নিয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সমঝোতায় আসতে পারে তাহলে খুব শিগগির আবার সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। আয়োজক কমিটির কাছে সম্মেলন বাতিলের কারণ জানতে চেয়ে ই-মেইল করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাংহাইয়ের ফুডান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শেন ডিংলি বলেন, চীন মনে করে, দেশের ভেতর করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারছে না বলেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিলে অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থাৎ দেশটি ভিন্নদিকে নজর ঘোরাতে চাচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, পুরো ঘটনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের পক্ষ নিয়েছে। এ ছাড়া চীন যদি আগে থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাত তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হতো বলে মনে করেন ট্রাম্প।
করোনা মহামারির এই সময়ে দুই দেশের এই দ্বন্দ্বের কারণে ভবিষ্যতের লড়াইটাই শুধু দুর্বল হবে। অধ্যাপক শেন মনে করেন, দুই দেশের সম্পর্কে প্রচণণ্ড অবনতি হয়েছে এবং তা খুবই উদ্বেগজনক। গত ২৬ মার্চ জি-২০ নেতারা করোনা মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে প্রথম ভিডিও কনফারেন্স করেছিলেন। সে সময় দেশগুলো অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের একটি প্যাকেজের বিষয়ে একমত হয়েছিল। এরপর দ্বিতীয় বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে তা বাতিল হয়ে গেল।