স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে ২ নারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এবার খোদ জেলায় লকডাউনে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। ৬ এপ্রিল সোমবার সকাল থেকে জেলা শহর ও উপজেলা সদরগুলোসহ অভ্যন্তরিণ প্রায় সকল সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সুনসান নীরবতা নেমে আসে। জেলা প্রশাসনের জারি করা এক গণবিজ্ঞপ্তিসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নজরদারি এবং পুলিশের কড়া অবস্থানে ওই অবস্থা নেমে আসে। প্রশাসনসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র্যাবও নামে টহলে। এছাড়া শহরের কয়েকটি এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন কার্যকরে নেওয়া হয় স্থানীয় উদ্যোগ।
সোমবার সরেজমিনে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা শহরের খোয়ারপাড়, থানামোড়, নতুন বাস টার্মিনাল ও শেরীব্রিজ এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ওই মোড়গুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে এদিন শক্ত অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। তাদের ওই অবস্থানের কারণে এ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী গাড়ি ও হালকা যান ছাড়া ইজিবাইক, রিক্সা ও মোটরসাইকেলসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াত প্রায় বন্ধ রয়েছে।
সেইসাথে বন্ধ রয়েছে ঔষধের দোকান ও কাঁচাবাজার ছাড়া অন্যান্য দোকানপাটও। ফলে একদিকে শহর যেমন হয়ে পড়েছে জনশূন্য, তেমনি অনেকটাই নীরব ও নিথর। কোথাও দু,একজন করে শহরে প্রবেশ করতে চাইলেই তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। অনিবার্য সমস্যা ছাড়া তাদেরকে শহরে প্রবেশে ও যাতায়াতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। একই ধরনের চিত্র জেলার নালিতাবাড়ী, নকলা, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা সদরে।
এদিকে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে শেরপুর-ঝিনাইগাতী, শেরপুর-নালিতাবাড়ী-নন্নী, শ্রীবরদী-বকশীগঞ্জ সড়ক যাতায়াত বন্ধের পাশাপাশি নকলা ও শ্রীবরদীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে কিংবা বাশ বেধে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহরের নবীনগর, মীরগঞ্জ, রাজবল্লভপুর, মধ্যশেরী বাড়ইপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় উদ্যোগে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওইসব এলাকায় কাউকে প্রবেশ বা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। ওইসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, করোনা পরিস্থিতি থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতেই তাদের ওই উদ্যোগ।
এ বিষয়ে নাগরিক সংগঠক জনউদ্যোগ আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিলম্বে হলেও লকডাউন কার্যকরে প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাবের পাশাপাশি কিছু কিছু এলাকার লোকজন স্ব-উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন। তার মতে, করোনা পরিস্থিতি থেকে আমাদেরকে রক্ষা পেতে হলে প্রতিটি মহল্লা পর্যায়ে ওই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ ঘরে থাকা ও সচেতন হওয়া ছাড়া আমাদের কোন গত্যন্তর নেই।