স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরের ৫ উপজেলায় কর্মহীন মানুষের বাড়িতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। ২৮ মার্চ শনিবার বিকেল ও রাতে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুবের নির্দেশনায় ৫ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে এলাকায় এলাকায় গিয়ে কর্মহীন দরিদ্র-অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাল-ডাল, আটা, লবন-তেল ও সাবান বস্তাভর্তি করে পৌঁছে দেন তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তাৎক্ষণিক মানবিক সহায়তা হিসেবে জেলায় মোট ২শ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে ওই বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে জেলার ৫টি উপজেলায় ১১১ মেট্রিক টন চাল ও ৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার পর পরই শনিবার বিকেল থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান শুরু করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ছাড়াও পিআইও, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন জানান, তিনি শনিবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে ৫ কেজি করে চাল, ডাল, আটা, লবন, তেল ও সাবান বিতরণ শুরু করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও লোকসমাগম বন্ধ থাকায় নিম্নআয়ের মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্র মানুষের মাঝে ওইসব খাদ্য বিতরণ শুরু করেছি। এছাড়া একইভাবে নালিতাবাড়ী, নকলা, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলাতেও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ।
কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ প্রসঙ্গে শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবিএম এহছানুল মামুন জানান, শনিবার শেরপুর সদর উপজেলায় ২০টি, নালিতাবাড়ী উপজেলায় ১৫টি, নকলা উপজেলায় ১৫টি, শ্রীবরদী উপজেলায় ১৫টি এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার ১০ টি দরিদ্র-অসহায় পরিবারকে মানবিক সহায়তা হিসাবে চাল-ডাল, আলু, তেল-লবণ ও সাবান প্রদান করা হয়। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তিগতভাবে এবং কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র পরিসরে নিম্ন আয়ের কর্মহীন মানুষের সহায়তায় খাদ্যসামগ্রী ও বিভিন্ন সেবা নিয়ে এগিয়ে আসার সংবাদও পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান এই কঠিন পরিস্থিতিতে এটা বেশ আশা জাগানিয়া বলে মনে করছেন নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবশ্যই ইনশাআল্লাহ এবার আমরা করোনা যুদ্ধেও বিজয়ী হবো। তিনি সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুধীসমাজ এবং বিত্তবানদের প্রতি গরীব, কর্মহীন, অসহায় মানুষদের পাশে সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।