ads

শনিবার , ২৮ মার্চ ২০২০ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

করোনা পরিস্থিতি : বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভাবনা : আবুল কালাম আজাদ

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
মার্চ ২৮, ২০২০ ৬:১৭ অপরাহ্ণ

জৈব পদার্থবিদ, সংখ্যার বিশ্লেষক ২০১৩ সালে রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিটের করোনার বৈশ্বিক দিক নিয়ে লিখিত নিবন্ধগুলো পড়লাম । তার সাহস জাগানিয়া ও যৌক্তিক বিশ্লেষণ বলছে ‘করোনার দাপট খুব শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে আসতে চলেছে’। করোনার সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ফলে এবার ধীরে ধীরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করবে।
করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোর তথ্যের উপর দৃষ্টি দিয়ে তিনি আরো বলেছেন, করোনার সংক্রমণ রুখতে লকডাউন-এর পদক্ষেপ গোটা বিশ্বেই ‘সহায়তাকারী শট’- এর মতো কাজ করেছে । তিনি বলেন, প্রতিদিন নতুন নতুন খবর শুনে মানুষ বিচলিত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সংক্রমণের হার অনেকটাই কমতে শুরু করেছে । যার অর্থ, করোনা মহামারি প্রায় অন্তিম স্তরে পৌঁছেছে।
আগেই বলেছি বিজ্ঞানী লেভিট একজন সংখ্যাবিশ্লেষকও । ১ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যার ওপর খেয়াল রাখছিলেন। চীনে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে লক্ষ্য করেন যে, চীনের হুবেই প্রদেশে প্রতিদিন ১৮শ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছিলেন। ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংক্রমণের হার এরকমই ছিল। কিন্তু তার পরের দিন থেকেই সংক্রমণের হার কমতে শুরু করে। এক সপ্তাহ পরে মৃত্যুর হারেও একই ধরনের কমতি তার নজরে আসে।
এই হার হ্রাসের হিসেব করে তিনি বলেন, যদি মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারে এবং মানুষের গতিবিধি যথাসম্ভব কমিয়ে রাখতে পারে, সেক্ষেত্রে অধিকাংশ দেশই খুব শিগগিরই করোনার গ্রাস থেকে মুক্তি পাবে । করোনা আতঙ্কে পরিস্থিতি যতোটা খারাপ মনে হচ্ছে, বাস্তবে তা ততোটা নয় বলেও দাবি করেন তিনি ।
লেভিটের যুক্তি ও পরামর্শ হলো, ‘বেশিরভাগ মানুষের শরীরে কভিড-১৯ প্রতিরোধে প্রাকৃতিক ব্যবস্থা রয়েছে। এখন আতঙ্ক নিয়ন্ত্রণটা জরুরি আর মহামারী নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
বরং লেভিট করোনার চেয়ে পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বেশী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কারণ করোনার বাড়াবাড়ি আমাদের অন্য সংকট বাড়াবে । মানুষ চাকরি হারাবে। হতাশায় আত্মহত্যার হার বেড়ে যেতে পারে । মন্দা দেখা দিতে পারে । এমন প্রেক্ষাপটে তিনি মানুষের জন্যে প্রচুর ইতিবাচক খবর প্রত্যাশা করেন। সবাইকে একটিই বার্তা দিতে চান, ‘করোনা জগৎ ধ্বংস করতে পারবে না।’
এই পরিস্থিতিতে আমরা বাংলাদেশের মানুষও আক্রান্ত । এখন এই মুহূর্তে আমাদের আক্রান্তের হার আর মৃত্যু কমাতে হলে আমাদের চরম লকডাউনই করতে হবে । অস্পর্শই থাকতে হবে কিছুদিন। কিন্তু হ্যা, এতেও আমাদের দেশের অনেক সমস্যা। স্বল্প আয়ের মানুষেরা খাবে কি ? কিন্তু যে করেই হোক এরও সমাধান বের করতে হবে। নিশ্চয় সমাধান আছেও এবং আমাদের তা খুঁজে বের করতেই হবে ।
এর সমাধানও সোজা। কিন্তু আমরা ঠিকভাবে জাতিকে প্রস্তুত করতে পারি নাই। আমাদের এলোমেলোর জন্যে শহরের চেয়ে গ্রামগুলোও এখন অনিরাপদ ও অনিয়ন্ত্রিত। আমরা বিচলিত। জাতিও বিচলিত। কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে, কেউ দিচ্ছে না।
এ থেকে আমাদের রক্ষা পেতে হলে যেহেতু আমাদের কিছুদিন স্পর্শের বাইরে থাকতেই হবে, সেহেতু শতভাগ লকডাউন নিশ্চিত করতেই হবে। এখন বিবেচ্য যে, এই লকডাউনে আমাদের কার কার কী কী অসুবিধা হতে পারে তা সনাক্ত করা এবং সমাধান করা। প্রধান সমস্যা হবে কিছু মানুষের খাবারের। ধারণা করি যে, আমরা প্রায় অধিকাংশই কারো সাহায্য ছাড়াই ৪ কি ৫ দিন পর্যন্ত চলতে পারবো। কিন্তু এর পরের দিনগুলোতে একসাথে দেশের কোটি কোটি গরীব মানুষ খাবারের অভাবে পড়বে। তখন খাবার না পেলে লকডাউন ভেঙে পড়বে। দৌড়াদৌড়ি বাড়বে। স্বেচ্ছাসেবক নামবে। ছুঁয়াছুঁয়ি বাড়বে। আক্রান্ত বাড়বে। আমাদের মৃত্যু বাড়বে। ক্ষতি বাড়বে।
উপায়? উপায় আছে। এই মহাসংকট সারা জাতির। জাতিগতভাবেই এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, পাড়া-মহল্লার স্বচ্ছল ও ধনী মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে নিজ দায়িত্বে। দায়িত্ব নিতে হবে যার যার বাড়ির আশেপাশের গরীব মানুষদের। কিছু চাল ডাল দান বা প্রদান করে একসাথে কিছুদিন খেয়ে পড়ে বাঁচতে হবে। এটা পরীক্ষা জাতির। পরীক্ষা তাদের, সৃষ্টিকর্তা যাদের সামাজিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন।
নচেৎ, স্বচ্ছল অস্বচ্ছল সবাইকেই বিপদে পড়তে হবে। রানী এলিজাবেথের পরিবারও যেমন বিপদে পড়েছেন। আল্লাহ সকলকে নিরাপদে রাখুন।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও নাগরিক সংগঠক, শেরপুর।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!