ভ্রমণ প্রতিবেদক : সবগুলো গম্বুজ একসঙ্গে দেখার সৌভাগ্য বোধহয় শুধু পাখিরই হয়েছে। আকাশ থেকে মসজিদটির দিকে তাকালেই মনে হবে যে, অসংখ্য মনোমুগ্ধকর বাটি সাজিয়ে রাখা হয়েছে; মাঝখানেরটা সুবিশাল। মসজিদের চারপাশটাও বেশ মনোমুগ্ধকর। দেয়াল ও গম্বুজের গায়ে বসেছে সোনালী রঙের বিভিন্ন টাইলস; যা সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।
বলা হচ্ছে টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদের কথা। অনেকের মতে, বিশ্বের অন্যকোনো মসজিদে এরচেয়ে বেশি গম্বুজ নেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে এটি নির্মাণ কাজ এখনও চলছে। ২০১৩ সালের ১৩ই জানুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন ওই মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এ মসজিদ দেখতে আসেন।

দ্বিতল ওই মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৪৪ ফুট এবং প্রস্থ ১৪৪। দৃষ্টিনন্দন মসজিদের ছাদে অবস্থিত মূল গম্বুজটি উচ্চতায় ৮১ ফুট ও এই গম্বুজের চারপাশকে ঘিরে ১৭ ফুট উচ্চতার আরও ২০০টি গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। মসজিদের চার কোণায় ১০১ ফুট উঁচু ৪ টি মিনার মিনার রয়েছে। এছাড়াও ৮১ ফুট উচ্চতার ৪ টি মিনার পাশাপশি স্থাপন করা হয়েছে। আর মসজিদের পাশে মূল মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছে, যার উচ্চতা ৪৫১ ফুট।

মসজিদের পশ্চিম পাশের দেয়ালে বসছে পূর্নাঙ্গ পবিত্র কোরআন শরীফ। মসজিদে বসেই যে কেউ কোরআন শরীফ পাঠ করতে পারবেন। কমপ্লেক্সটির মূল ফটকে বসছে আল্লাহর ৯৯ নাম; এতে ব্যবহার হচ্ছে প্রায় ৫০ মন পিতল। সম্পূর্ণ মসজিদটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকার কথা থাকলেও সঙ্গে বসানো হচ্ছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা। এছাড়া মসজিদ কমপ্লেক্সে রয়েছে লাশ রাখার হিমাগার, বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত ওই মসজিদটির ছাদে সর্বমোট ২০১ টি কারুকার্যময় গম্বুজ থাকার কারণে মসজিদটি ‘২০১ গম্বুজ মসজিদ’ নামে পরিচিতি লাভ করে। মসজিদটি টাঙ্গাইল থেকে ৫০ কিলোমিটার ও গোপালপুর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গোপালপুর থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি বা মাহিন্দ্রাতে যাওয়া যাবে দক্ষিণ
পাথালিয়া। জনপ্রতি ভাড়া নিবে ৩০-৪০ টাকা। মসজিদের পাশে থাকার মতো ব্যাবস্থা নেই। ঢাকা থেকে সকালে রওনা করলে খুব সহজেই একদিনে ঢাকা ফিরে আসা সম্ভব। এ ছাড়া কেউ থাকতে চাইলে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ধনবাড়ির নবাব বাড়িতে থাকতে পারবেন। মসজিদের সামনে বেশকিছু চটপটি, ফুসকা, চায়ের দোকান থাকলেও রেস্টুরেন্ট নেই। তাই খাবারের জন্য গোপালপুর কিংবা শিমলা বাজারের উপর নির্ভর করতে হবে আপনাকে।