এলাকায় লাশ দাফন ॥ শোকের ছায়া
শ্যামলবাংলা ডেস্ক ॥ রাজধানী ঢাকার মগবাজারের দিলু রোডের একটি বাসায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছে শেরপুরের মেধাবী শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষার্থী আফরিন জাহান যূথী (১৭)। ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের সূর্যদী গ্রামের এলাকায় জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে ঢাকা থেকে যুথীর লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসীর আবেগতাড়িত কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। যূথীর লাশ প্রথমে অজ্ঞাত থাকলেও সকাল ১০টার দিকে পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়।
জানা যায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভোররাতে মগবাজারের দিলু রোডের পাঁচতলা একটি আবাসিক ভবনের নিচতলার গ্যারেজে বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এরপর চিৎকারে ঘুম ভাঙে ওই ভবনে বসবাসকারীদের। ওইসময় ভবনের ছাদের টিনশেডে থাকা শেরপুরের সূর্যদী এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকায় গণপূর্ত বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকুরিরত জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী লাল ভানু, ছেলে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আপন ও মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আফরিন জাহান যূথী জেগে উঠেন। এরই মধ্যে ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় তাদের ঘর। ওই সময় যূথী গেট খুলে নিচে নেমে যায়। আর স্ত্রী, ছেলেসহ জাহাঙ্গীর পাশের ভবনের ছাদে চলে যান। ওই সময় ছাদে পড়ে গিয়ে স্ত্রীসহ তার পা ভেঙে যায়। পরে অন্যদের সাথে তাদেরকেও উদ্ধারকারীরা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। জাহাঙ্গীরের অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও তার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ।
যুথির ভাই আপন জানান, ঘটনার সময় আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। আগুন আগুন চিৎকার শুনে সবাই এদিক সেদিক ছুটতে শুরু করে। আমার বোন সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। সেখানেই সে আগুনে দগ্ধ হয়।
নবারুণ পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ শ্যামলবাংলা২৪ডটকমকে জানান, যূথী স্কুলজীবন থেকেই একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সে ২০১৮ সালে নবারুণ পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এবার সে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। ওই কলেজ থেকে টেস্ট পরীক্ষায় সে মেধাতালিকায় দ্বিতীয় হয়েছিল। যূথীর মামা ও ইমামবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজান আলী জানান, মেধাবী শিক্ষার্থী যূথীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা পরিবারসহ এলাকাবাসী কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।