স্পোর্টস ডেস্ক ॥ লক্ষ্যটা খুব বড় ছিলো না। বর্তমান যুগের মারকাটারি ক্রিকেটে ২০ ওভারে ১৭৮ রান তাড়া হচ্ছে হরহামেশা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের শুরুটাও ছিলো ঠিক তেমনই। রান তাড়ায় প্রথম ১০ ওভারে ম্যাচ প্রায় পকেটে ভরে ফেলেছিল ইংলিশরা। কিন্তু ‘অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট’- কথাটি আরেকবার প্রমাণ করে, শেষ ১০ ওভারে ম্যাচ নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। জমজমাট ম্যাচের শেষ ওভারে মাত্র ৫ রান খরচ করে দলকে ১ রানের নাটকীয় জয় উপহার দিয়েছেন ডানহাতি পেসার লুঙ্গি এনগিডি। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।
১২ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাতে ইস্ট লন্ডনের বাফালো পার্কে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৭৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ইংল্যান্ডের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১৭৬ রান করে। অথচ এক পর্যায়ে নয় ওভারেই ৯২ রান করে ফেলেছিল ইংলিশরা। কিন্তু শেষ এগার ওভারে ৮৪ রানের বেশি করতে পারেনি ইয়ন মরগ্যানের দল।
তবে অধিনায়ক মরগ্যান সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেছিলেন দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তে। জেতার জন্য শেষের ১২ বলে ২৩ রান করতে হতো ইংল্যান্ডকে। বিউরান হেন্ডরিকসের করা সে ওভারের প্রথম পাঁচ বলেই ১৬ রান করে ফেলেন মরগ্যান। কিন্তু ওভারের শেষ বলে ইংলিশ অধিনায়ককে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন বিউরান। আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৫২ রান করেন মরগ্যান।
শেষের ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান দরকার ছিলো ইংল্যান্ডের। প্রথম বলেই ২ রান নিয়ে নেন টম কুরান। সমীকরণ হয় আরও সহজ। তবে পরের বলেই কুরানকে সাজঘরের পথ দেখান লুঙ্গি। তৃতীয় বলে এলোপাথাড়ি শট ঘুরিয়েও ব্যাটে লাগাতে পারেননি মইন আলি। চতুর্থ বলে আবার আসে ২ রান। সমীকরণ নেমে আসে দুই বলে ৩ রানে।
তখনও বাকি ছিলো নাটকীয়তার। ওভারে পঞ্চম বলে নিখুঁত এক ইয়র্কারে মইনকে সরাসরি বোল্ড করে দেন লুঙ্গি। শেষ বলে বাকি ছিলো ৩ রান। ম্যাচ টাই করে সুপার ওভারে নিতে হলেও দরকার ২ রান। এমতাবস্থায় দ্বিতীয় রান নিতে গিয়েই রানআউটের শিকার হন আদিল রশিদ। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১ রানে পরাজিত হয় ইংল্যান্ড।
অথচ ইংলিশদের উড়ন্ত সূচনাই এনে দিয়েছিলেন জেসন রয়। সাত চার ও তিন ছয়ের মারে মাত্র ৩৮ বলে ৭০ রান করেন এ ডানহাতি ওপেনার। এছাড়া জস বাটলার ১০ বলে ১৫ এবং জনি বেয়ারস্টো ১৯ বলে করেন ২৩ রান। এরপর অধিনায়ক মরগ্যানের ৫২ ছাড়া দলের আর কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। যে কারণে হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচও জিততে পারেনি সফরকারীরা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৭৭ রানের সংগ্রহ পুরোটাই দলীয় পারফরম্যান্সের অবদান। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি দলের কেউই। তবে ছোট ছোট কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের সবাই।
সর্বোচ্চ ৪৩ রান (২৭ বলে) করেন মিডল অর্ডার থেকে ওপেনার বনে যাওয়া টেম্বা বাভুমা। এছাড়া কুইন্টন ডি কক ১৫ বলে ৩১, রসি ফন ডার ডুসেন ২৬ বলে ৩১, জনজন স্মাটস ২০ বলে ২০, ডেভিড মিলার ১৪ বলে ১৬ এবং আন্দিল ফেহলুকায়ো করেন ১৫ বলে ১৮ রান। এতেই লড়াই করার পুঁজি পায় স্বাগতিকরা।