শ্যামলবাংলা ডেস্ক : ক্রিকেটকে যদি ভদ্রলোকের খেলা ভাবা হয়, তবে তার যোগ্য বিজ্ঞাপন হতে পারেন মাহমুদউল্লাহ। একজন নিপাট ভদ্রলোক বলতে যা বোঝানো যায় তিনি তারই প্রতীক। নিজেকে সব সময় আড়ালে রাখতেই পছন্দ তার। কিন্তু দলের জন্য নিজের দায়িত্বটা পালন করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
একটি মঞ্চনাটক সফলতার সঙ্গে উপস্থাপনে এর অভিনয়শিল্পী ছাড়াও মঞ্চ প্রস্তুতকারী, লাইটম্যানরা থাকেন আড়ালের নায়ক হয়ে। তাদের ছাড়া কোনোভাবেই সঠিকভাবে এর উপস্থাপন সম্ভব নয়। তেমনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক অনেক জয়ে সামনের নায়কদের সঙ্গে আছেন একজন অন্তরালের নায়ক। যার অনেক অনেক বীরত্বগাথাও থেকে যায় আড়ালেই। তিনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই আড়ালের নায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্মদিন আজ (৪ ফেব্রুয়ারি)। শ্যামলবাংলা২৪ডটকম’র পক্ষ থেকে রইলো শুভ কামনা, শুভ জন্মদিন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯৮৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। রিয়াদ বাংলাদেশের পক্ষে ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। এ ছাড়া প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন এ ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার। জাতীয় দলের অন্যতম সিনিয়র সদস্য। অলরাউন্ডার, কার্যকরী মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ও অকেশনাল অফ স্পিন বোলার মোহাম্মদ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
মাহমুদউল্লাহর প্রথম ওয়ানডে অভিষেক হয় ২০০৭ সালের জুলাই মাসে। বাংলাদেশ দলের শ্রীলংকা সফর ছিল সেটি। সফরের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে দেশের হয়ে প্রথম ২২ গজে ব্যাট হাতে তুলে নেন এই কৃতী ক্রিকেটার। এর পর থেকে দেশের হয়ে প্রায় ধারাবাহিকভাবে তিনি পারফর্ম করে চলেছেন।
২০০৭ সালেই কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ৪ জাতি সিরিজ এবং আইসিসি বিশ্বকাপ টুয়েন্টি-২০(২০০৭) প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ স্কোয়াডে ছিলেন তিনি।
২০১৪ সালের ১৫ জুন সফরকারী ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিকে দশম বাংলাদেশি হিসেবে মাহমুদউল্লাহ তার শততম ওডিআই খেলেন। থেমে নেই তার ব্যাট ও বল। ১৫৩ ম্যাচ খেলে ওডিআই ক্যারিয়ারে তার ঝুলিতে জমেছে তিন হাজার ৩২৭ রান। তিনটি শতকসহ ১৮টি অর্ধশতক রয়েছে তার এ রান ভাণ্ডারে। ব্যাটিং গড় ৩৩.৯৪। উইকেট পেয়েছেন ৭০টি। ৬০টি টি-টোয়েন্টি খেলে তিনি ৮৩৭ রান করেছেন। উইকেট পেয়েছেন ২২টি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের টেস্ট অভিষেক হয় ২০০৯ সালের ৯ জুলাই। আর্নোস ভ্যাল স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। অভিষেক টেস্টেই রিয়াদ বিপক্ষ দলের পাঁচজনকে আউট করে কৃতিত্ব দেখান। ফলে তিনি তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই পাঁচ উইকেট লাভ করেন। তার ওই ক্রীড়া নৈপুণ্যে বাংলাদেশ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে জয়লাভ করে।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে রিয়াদের পারফম্যান্স চোখ ধাঁধানো। ৯ মার্চ অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি অভিষেক সেঞ্চুরি করেন, যা ছিল বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরি।
বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বকাপের যে কোনো উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ১৪১ রানের সর্বোচ্চ জুটি গড়ার রেকর্ড রয়েছে রিয়াদের। ১৩ মার্চ গ্রুপ পর্বে দলের সর্বশেষ খেলায় নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে অপরাজিত ১২৮* রান করে নিজস্ব দ্বিতীয় শতরান করেন রিয়াদ। এ নিয়ে তিনি বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে দুই খেলায় শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন, যা এর আগে কোনো বাংলাদেশি খোলোয়াড় করতে পারেননি।