খোরশেদ আলম, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) ॥ শেরপুরের ঝিনাইগাতীর বিখ্যাত বাউল আব্দুর রহমানের ভাগ্যে ৮০ বছরেও মেলেনি বয়স্কভাতার কার্ড। তার দিনও কাটে এখন খেয়ে, না খেয়ে। আব্দুর রহমান উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের মনাকোষা গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, ৩ ছেলেসহ ৫ সদস্যের পরিবার আব্দুর রহমানের। পাকিস্তান আমল থেকেই তিনি বাউল গান, জারী গান, বিচ্ছেদ গান গেয়ে চষে বেড়াতেন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে-গঞ্জে। ১২ একর জমিও ছিলেন তার। তিনি জীবন-জীবিকার প্রতি মনোযোগী না হয়ে গানই ছিল তার জীবনের সবকিছু। এভাবেই ১২ একর জমি খুইয়েছেন তিনি। এখন আব্দুর রহমানের বয়স ৮০ ছুঁইছুঁই। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে গানই এখন তার জীবিকার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন, চোখেও কম দেখেন তিনি। এরপরেও লাঠিভর করে প্রতিদিন বের হতে হয় গান গাইতে। এখনও তার মধুর কণ্ঠের গানের তুলনা নেই। তার গান একবার শুনলে বারবার শুনতে ইচ্ছে করবে যে কারও। তিনি রাস্তার মোড়ে বিভিন্ন হাটে-বাজারে ও গ্রামে গান গেয়ে থাকেন। এলাকা ছাড়াও তিনি গান গাইতে যান দেশের দূর-দূরান্ত অঞ্চলে। গান গেয়ে যা পান তাই দিয়ে কোন রকমে চলে তার সংসার। অনেক সময় অনাহারে, অর্ধাহারে থাকতে হয় তাকে। বসতভিটার ৯ শতাংশ জমি ছাড়া সহায়-সম্বল বলতে এখন আর কিছুই নেই। থাকার ঘরটিও ভেঙ্গে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ৩ ছেলে বিয়েশাদি করে আলাদা সংসার করছে। গান গেয়ে যা অর্থ পান তা দিয়ে সংসার চলে না তাদের।
আব্দুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ঘর তো দূরের কথা, একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন অনেক। কিন্তু আজও তার ভাগ্যে জুটেনি বয়স্ক ভাতা’র কার্ড।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মন্টু জানান, বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শীঘ্রই তার নামে কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।