শ্যামলবাংলা ডেস্ক ॥ একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক, উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় সচেতন মহলের অনেকেই প্রকাশিত খবরটিকে বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে ওই খবরের তীব্র প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ওই নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিকে শোকজ করেছেন।
জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি ‘দুদকের নোটিশ পেয়েও বেপরোয়া নালিতাবাড়ীর গোপাল’ শিরোনামে ‘নিউজনেক্সটবিডিডটকম’ নামে একটি অনলাইন নিউজপোর্টালে একটি খবর প্রকাশিত হয়। ওই খবরে ‘স্থানীয় সংসদ সদস্যের শুভদৃষ্টি থাকার কারণে গোপাল পুরো নালিতাবাড়ী এলাকায় অবৈধভাবে শত একর জমি, বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাটবাড়ির মালিকসহ মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস, ভূমি দখল, অবৈধ বালু উত্তোলন, নদী দখল এবং দলের স্থানীয় বিভিন্ন কমিটির পদ বিক্রি করাসহ নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালকে সম্পত্তির হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে এবং ওই অভিযোগ এখনও তদন্তাধীন রয়েছে’ বলে দাবি করা হয়। অন্যদিকে ওই খবরটি সংশ্লিষ্ট নিউজ পোর্টালে প্রচার এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নালিতাবাড়ীতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এ প্রেক্ষিতে ওই খবরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে গোপাল চন্দ্র সরকার বলেন, অনলাইনে প্রকাশিত খবরটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই খবরে আমার সম্পর্কে মনগড়া, মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর খবর লেখা হয়েছে। শুধু তাই নয় আমার বড় ভাই সম্পর্কেও জঘন্য মিথ্যাচার করা হয়েছে। আমি নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এবং সাংবাদিক। বিগত ১৯৯৬ সালে ‘দৈনিক বাংলার বানী’ নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এরপর ২০০১ সাল হতে আজোবধি ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত আছি। পাশাপাশি সুদীর্ঘ ১৬ বছর প্রেসক্লাব নালিতাবাড়ীর সাধারন সম্পাদক ছিলাম। তিনি আরও বলেন, আমি শত একর জমির মালিক, দুদক আমাকে নোটিশ পাঠিয়েছে এসব তথ্য ওই প্রতিনিধি কোথা থেকে পেয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। আমাকে জড়িয়ে মাদক সম্পর্কিত যেসব কথা বলা হয়েছে তা এতটাই মিথ্যা যে, নালিতাবাড়ীর মানুষ কখনো বিশ্বাস করবে না এবং ওই প্রতিনিধি কোন প্রমাণ দিতে পারবে না। যা পুরোটাই কল্পনাপ্রসূত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
প্রকাশিত খবরে আমার কোন প্রকার বক্তব্য নেয়া হয়নি। যেসব জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া। নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র সাংবাদিকদের কাছে ওইসব বক্তব্য দেননি। পাশাপাশি স্থানীয় সর্বজন শ্রদ্ধেয় এমপি সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আমাকে জড়িয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে তা এতটাই মিথ্যা যে কেউ বিশ্বাস করবে না। গোপালের প্রতিবাদের সাথে একমত পোষণ করেছেন নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ দলিল উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ও উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লুইজ নেংমিনজা। তারা বলেন, কতিপয় দুস্কৃতকারী নিজেদের স্বার্থ ও উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বিভ্রান্ত করেছে। সেইসাথে তারা ওই বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তি, সাবেক সফল কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা গোপাল চন্দ্র সরকার ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শ্যামলবাংলা২৪ডটকমকে জানিয়েছেন, তাকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক খবরের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ওই নিউজপোর্টাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে আগামী ৩ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।