স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম তৃণমূল মানুষের কাছে তথ্য অধিকার আইনের কথা তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যাদের জন্য আইন তাদের সবার কাছে আমাদের যাওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু সাংবাদিকরা সাধারন মানুষের খবর অনেক বেশি জানেন। প্রচার করতে পারেন। সম্প্রতি তাদের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কারণে চাঞ্চল্যকর কিছু মামলায় সাজা হয়েছে। তাই তথ্য অধিকার আইনের সুফল পেতেও সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। দু’পক্ষ যৌথভাবে কাজ করলে মানুষ সুফল পাবে। ‘তথ্য চাইলে জনগন, দিতে বাধ্য প্রশাসন’ এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে ১৫ জানুয়ারি বুধবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দিনব্যাপী আয়োজিত তথ্য অধিকার আইন ও আরটিআই অনলাইন ট্রাকিং সিস্টেম বিষয়ে দিনব্যাপি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি ওইসব কথা বলেন।
তথ্য কমিশনার বলেন, সাংবাদিকরা নিশ্চয়ই জানার অধিকার আছে- ডিসি সাহেবের কাছে কতগুলো কম্বল এসেছে। এগুলো কাকে দেওয়া হচ্ছে। তারা এলজিইডির প্রকৌশলীকে অবশ্যই প্রশ্ন করবেন কাজে ব্যবহৃত ইটের মান কেমন- কাজের বাজেট কত। তিনি আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এ দেশের জনগণের আইন। জনগণ এর প্রয়োগের ক্ষমতা রাখেন। তথ্য অধিকার আইন চালু হওয়ায় সকল নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার হয়েছে। তারা যেকোনো দপ্তরে কর্তৃপক্ষের কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে তথ্য জানতে পারবেন। তথ্য না দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ তথ্য কমিশন ও শেরপুর জেলা প্রশাসন যৌথভাবে আয়োজিত ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রজেক্টরের সাহয্যে বিভিন্ন স্লাইডের মাধ্যমে বক্তব্য উপস্থাপন করেন তথ্য কমিশন সচিব মোঃ তৌফিকুল আলম। জেলা প্রশাসনের পক্ষে তথ্য অধিকার আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক এবিএম এহছানুল মামুন। আরটিআই অনলাইন ট্রাকিং সিস্টেম বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন তথ্য কমিশনের প্রোগ্রামার তরিকুল ইসলাম। মুক্ত আলোচনায় উঠে আসার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম। প্রশিক্ষণে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোখছেদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরে আলম মৃর্ধা, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোবারক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক শিব শঙ্কর কারুয়া শিবু, শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, সাংবাদিক দেবাশীষ ভট্টাচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা তথ্য অফিসার তাহমিনা জান্নাত লিমা।
পরে বিকেলে একই বিষয়ে এক জনঅবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্কুলের-কলেজের প্রধান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানগণ, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা, সুধীজন ও সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।