স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গারোপাহাড়ের ভারত সীমান্তঘেষা রানীশিমূল ইউনিয়নের রাঙ্গাজান গ্রামে অবস্থান করতো শেরপুরের শ্রীবরদী অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা। এ গ্রামের পাহাড়ী নদী সোমেশ্বরী পার হলেই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মহেন্দ্রগঞ্জ। মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন শেষে নৌকা যোগে নদী পার হয়ে মহেন্দ্রগঞ্জে অবস্থান নিত।
১৯৭১ সালে কুড়িকাহনিয়া কোটামনি যুদ্ধে আহত হন মুক্তিযোদ্ধা কেএম নাজমুল হাসান খান বুলবুলসহ ৩ জন। পরে সহযোগীরা তাদের রাঙ্গাজান গ্রামে নিয়ে এলে ৩ জনই মৃত্যুবরণ করেন। ওইস্থানেই তাদের সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে ওই গ্রামে পাকহানাদার বাহিনী হামলা চালিয়ে আরও ২৫ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে এ গ্রামে পুতে রাখে। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৮ বছর পর স্থানীয় এমপি’র চেষ্টায় সোমেশ্বরী নদীর তীরে প্রত্যন্ত ওই গ্রামে প্রায় ২৪ লাখ টাকায় বধ্যভূমি স্মতিস্তম্ভ তৈরি হয়েছে।

৮ জানুয়ারি বুধবার সকালে বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁন। এওইসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তর নিলুফা আক্তার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুুরুল ইসলাম হিরু, মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম, আবদুল্লাহ সালেহ, মো. হামিদুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী লাল, ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা প্রমুখ। ওইসময় বক্তারা যুদ্ধকালীন সময়ের দিনের স্মৃতিচারণ করেন।
এমপি প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃ প্রতিষ্ঠার জন্য সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া পাকহানাদার বাহিনীর পৈশাচিক হত্যাকান্ডের সাক্ষী বধ্যভ’মি রক্ষায় নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার- আলবদরদের নৃশংসতার সাক্ষী বধ্যভূমি রক্ষায় তিনি বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তুলছেন। যাতে নতুন প্রজন্ম ইতিহাসের নির্মম হত্যাকান্ডের কথা জানতে পারে।
