জেলা প্রশাসনের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর আওতায় শেরপুরের নকলা উপজেলার সুতিখালী নদীতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর সোমবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল আলম রাসেলের নেতৃত্বে ওই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ওইসময় এস্কেভেটর ও প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিয়ে নদীর অবৈধ দখলদারদের দেওয়া বাধ ও পুকুরের পার কেটে দখলমুক্ত করা হয়।
জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রের শাখা সুতিখালী নদীতে নকলা উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নে স্থানীয় ৪০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি বাধ দিয়ে পুকুর তৈরি করে প্রায় ৪০ বছর যাবত অবৈধভাবে দখল করে পুকুর ও জলাশয়সহ নানা স্থাপনা তৈরি করে রেখেছিল। ওই নদীর পাশে একসময় যাদের ছিল ৫-১০ শতাংশ জমি, তারা ৫০ থেকে ১শ শতাংশ জমি ভোগদখলে নিয়ে কেউ গড়ে তোলেন পুকুর, আবার কেউ বা করেন ধান চাষ বা মাটির ব্যবসা। ফলে সুতিখালী নদীর প্রায় ৮০/৯০ ভাগই বেদখলে চলে যায়। এতে প্রায় ২৩০ ফুট প্রশস্ত ও ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সুতিখালী নদীর অস্তিত্বই বিলীন হয়ে পড়ে। এ নিয়ে শ্যামলবাংলা২৪ডটকমসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আন্দোলনে নামে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ। ওই অবস্থায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সদিচ্ছায় নদীটি রক্ষায় নানামুখী তৎপরতা শুরু করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। এরই মধ্যে সারাদেশে খাল-বিল, নদী রক্ষায় উচ্ছেদ অভিযানের আওতায় শেরপুর জেলায় প্রথমভাগেই সুতিখালী নদীটি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তোফায়েল আহমেদ, নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ড শেরপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলামসহ পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শেরপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম জানান, ৬৪ জেলায় নদী-নালা, খাল-বিল রক্ষা কর্মসূচির আওতায় এখানকার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সুতিখালী নদীর ১০ কিলোমিটার অংশের প্রথম ৩ দিনে ৩ কিলোমিটার এবং পর্যায়ক্রমে পুরোটাতেই অভিযান চালানো হবে। অভিযান শেষে একই প্রকল্পের আওতায় নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য নদীটি খননের কাজ শুরু করা হবে।