স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে ঐতিহাসিক সূর্যদী যুদ্ধ ও গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ নভেম্বর রবিবার বিকেলে সূর্যদী এ আহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে আয়োজিত ওই স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। ওইসময় তিনি বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। সেই যুদ্ধের এক নিদর্শন সূযদী যুদ্ধ ও গণহত্যা। ওই গণহত্যায় শহীদদের বিপত্নীক স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের ভুলে গেলে চলবে না। তাদেরকেও যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। সেইসাথে সেই যুদ্ধ ও গণহত্যার স্মৃতি রক্ষায় নিতে হবে কার্যকর উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়েই আমরা তাদেরকে মূল্যায়ন করতে পারি।
সূর্যদী যুদ্ধ ও গণহত্যা দিবস উদযাপন পরিষদের আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে ওই স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবিএম এহছানুল মামুন, পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ছাওয়ার জাহান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নূরুল ইসলাম হিরু, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার এডভোকেট মোখলেছুর রহমান আকন্দ, সহযোগী অধ্যাপক শিব শঙ্কর কারুয়া শিবু, সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শারমিন রহমান অমি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারী চাঁন, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ভুট্টো, সদস্য শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। ওইসময় শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরে শহীদ পরিবারের সদস্যদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও তাদের মাঝে শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক। এরপর তিনি আন্ধারিয়া বানিয়াপাড়া বধ্যভূমি পরিদর্শন করে শহীদদের স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর এদেশীয় দোসর আলবদর, রাজাকারদের সহযোগিতায় ওইদিন সকালে সূর্যদী গ্রামে পাক হানাদার বাহিনী নিরীহ গ্রামবাসীর উপর হামলা চালিয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৭ জন নারী পুরুষকে হত্যা করে। তাই স্বাধীনতা পরবর্তী ওই দিনটি স্মরণ রাখতে শেরপুর সদর উপজেলাবাসী ২৪ নভেম্বর সূর্যদী যুদ্ধ ও গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।