ads

শনিবার , ৯ নভেম্বর ২০১৯ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

নালিতাবাড়ীতে স্কুলছাত্র অমি হত্যার রহস্য উদঘাটন

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
নভেম্বর ৯, ২০১৯ ৫:৩২ অপরাহ্ণ

মামলা ডিবিতে হস্তান্তর, গ্রেফতার ১১, একজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকিব ইসলাম খান অমি (১২) হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নেতৃত্বে থানা পুলিশ হত্যা মামলার ৩ দিনের মাথায় ওই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করে। তাতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অমিকে হত্যার পাশাপাশি মুক্তিপণ আদায়ের ফন্দি আঁটা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে মামলাটি তদন্তের জন্য শুক্রবার থানা পুলিশের হাত থেকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই মামলায় ১১ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে রাকিব হোসেন রাকিব (২১), জসিম উদ্দিন (২৫), সিয়াম (২০), রজব আলী (৩৫), রেজাউল করিম (৩৮), মফিজুল ইসলাম (১৫), আব্দুস সালাম (৫৫), রিপন (১৫), উমর কাজী রাব্বী (১৮) ও তার মা উম্মে কুলসুম (৩৫), দাদি আয়েশা বেগম (৬৫)। এদের মধ্যে যুবকরা স্থানীয় একটি গ্যাং চক্রের সাথে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে অমি হত্যার ঘটনায় জেলা পুলিশের দৃঢ় অবস্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অমি’র পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয় সচেতন মহল। সেইসাথে তারা ওই মামলায় দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবির) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র অমি হত্যা মামলার পরিবর্তিত তদন্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান ওই মামলার প্রাথমিক রহস্য উদঘাটনের সত্যতা নিশ্চিত করে শনিবার জানান, মামলাটি ইতোমধ্যে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। মামলায় পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে ডিবি ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে প্রধান আসামি উমর কাজী রাব্বীসহ ১১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রাব্বী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যদের পুলিশ রিমাণ্ডের আবেদনের বিষয়ে আদালতে শুনানীর জন্য ১১ নভেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। তিনি আরও জানান, পুলিশ সুপারসহ সিনিয়র অন্যান্য অফিসারদের তত্ত্বাবধানে মামলাটি অতি সতর্কতা ও গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। সেইসাথে মামলার পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদঘাটনে চেষ্টা ও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, গত ২ নভেম্বর নালিতাবাড়ী শহরের পূর্ব কালিনগর মহল্লার আব্দুর রউফ খানের ছেলে ও স্থানীয় শাহীন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অমি শনিবার বিকেল ৪ টার দিকে বাড়ির কাছেই মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত নানাভাবে তৎপর থাকে থানা পুলিশ। কিন্তু ৪ দিনেও তার সন্ধান মেলেনি। একপর্যায়ে অমির পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়, তাদের সাথে প্রতিবেশিদের ২০১৬ সালের অমির ভাই জেনিথকে ক্ষুরাঘাতের ঘটনায় বিচারাধীন মামলা নিয়ে দ্বন্দ্বের কথা। পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে নিখোঁজের চতুথ দিন তৎপরতা বৃদ্ধি করে। রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে জেনিথকে ক্ষুরাঘাতকারী রাকিব, রাকিবের সহযোগী জসিম ও সিয়ামকে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অমির বাড়ির কাছাকাছি একটি ধানক্ষেত থেকে অর্ধগলিত বস্তাবন্দি অবস্থায় অমির লাশ উদ্ধার হয়। এরপর ওই ঘটনায় নিহত অমির বাবা বাদী হয়ে ৪ জনকে স্ব-নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্তে আরও আরও ৭জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলে ঘটনার সাথে তাদেরও সম্পৃক্ততা খুঁজে পায় পুলিশ।
এদিকে আদালতে দেওয়া রাব্বীর জবানবন্দীতে বেরিয়ে এসেছে অমির লোমর্হষক হত্যাকাহিনী। প্রাপ্ত তথ্যমতে, সেদিন খেলার মাঠ থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ি ফিরছিল অমি। বাড়ির সামনে আসতেই অমিদের প্রতিবেশি আয়নাল হকের ছেলে উমর কাজী রাব্বী (১৮) অমিকে দেয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে খেলনা বোমা বানানোর কথা বলে তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়। বাড়ি নিয়ে অমিকে দেয়াশলাইয়ের কাঠি থেকে বোমা বানাতে দেয়। ওইসময় অমি বোমা বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পর্দা লাগানোর কাজে ব্যবহৃত বিশেষ তার দিয়ে অমির গলা চেপে ধরে এবং গামছা ও রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। অমিকে হত্যার পর রাব্বী অমির লাশ নিজের ঘরে রেখেই স্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে যায় এবং মাঠে ফুটবল খেলে। অন্যদিকে এক-দেড় ঘণ্টা সময় পার হয়ে গেলেও অমি বাড়ি না ফেরায় তার মা ঝর্ণা অমিকে আশপাশে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়। অমির স্বজনদের সাথে সাথে হত্যাকারী রাব্বী ও তার পরিবারের লোকেরাও অমিকে খুঁজতে থাকে। শহরে করা হয় মাইকিং। খুঁজে দেখা হয় বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে। রাত নয়টার দিকে অমির পরিবারের পক্ষ থেকে নালিতাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল অমির বাড়িতে আসেন ও নিখোঁজের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
এদিকে হত্যার পর অমির লাশ গুম করে মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা আঁটে ঘাতকরা। তারা নতুন সিমকার্ড ও একটি মোবাইল ফোন কিনে আনে। কিন্তু অমি নিখোঁজের পর তাকে সন্ধানের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তার কথা ভেবে মুক্তিপণ চায়নি হত্যাকারীরা। এমনকি লাশটি গুমের পথও বন্ধ হয়ে যায় তাদের। ফলে ঘরের মধ্যে হাত-পা বেঁধে বস্তাবন্দি করে রাখা হয় লাশটি। পরে সুযোগ বুঝে বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে প্রায় ১শ গজ দূরে ফেলে রাখা হয় নিথর অমিকে।
উদ্ধারের সময় অমি’র গায়ে প্রতিবেশি রাব্বীর ব্যবহৃত একটি শার্ট পড়ানো দেখে রাব্বীকে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়। পরে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাব্বীকে নিয়ে ৬ষ্ঠ দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে হাজির হয় থানা ও ডিবি পুলিশ। ওইসময় অমিকে হত্যার বিবরণ দেয় রাব্বী। তবে রাব্বীর বিবরণে যথেষ্ট গড়মিল থাকায় বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে পুলিশ। অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে তদন্তের স্বার্থে মামলাটি শুক্রবার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম জানান, পূর্ব শত্রুতার কারণে ওই হত্যাকাণ্ডে প্রতিপক্ষের যোগসূত্র রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। পাশাপাশি হত্যাকারী চক্রটির উদ্দেশ্য ছিল অমিকে হত্যার পর গুম করে মুক্তিপণ আদায় করা। তবে ওইসব তথ্যও যথেষ্ট নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, অধিকতর তদন্ত শেষে অমি হত্যার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!