নদীর তীরে
ফিরোজ আহমেদ
————————–
নদীর তীরে বাধিছিলাম ঘর
জোয়ান স্বামীরে নিয়া,
চোখে চোখে মোরে রাখিতো সদা
সাদরে আদর দিয়া।
বাহু ভরা বল কর্মে চপল
খাটুনি করিত শত,
ছেড়া গামছায় ভালো বাসিতাম
ঘাম মুছিতাম কত।
ঘন সন্ধ্যায় ঝড় উঠিল
উথাল নদীর পানি,
হুংকারে যেন ভাঙ্গিয়া দেয়
সোনা সংসার খানি।
আকাশ চিড়িয়া বৃষ্টি ধারা
বাতাস ক্ষণে ক্ষণে,
তব বক্ষে জড়ায়ে রাখিছে
মোর তাহারি সনে।
বাজার হইতে ফিরিবার কালে
সওদা করিতো কি,
কানের দুল হাতের চুড়ি
সঙ্গে মেহেদি।
একদিন শুনি শহুরে চাচা
কামের লাগি ডাক,
আমারে রাখি যাইবা নাকি
বকুল বিলাসী হাট।
নদীর জলে স্নান করি আসি
স্বামী মোরে কানে কয়,
বিদায়ের ক্ষণ এই আসিল
নৌকা বাধা রয়।
আমি কহিলাম চোখ মুছিলাম
আবার কহিলাম কি,
ফিরিবার কালে মনে যেন থাকে
আলতা মেহেদি।
এরপরে আর হয়নি দেখা
বছর তিনেক পার,
না জানি সে কখন ভুলিছে
ছিলাম আমি যার।
নদীর উপড়ে কত তান্ডব
বাতাসের আনাগোনা,
চৈত্র খড়া মাথার উপরে
চক্ষু জুড়িয়া লোনা।
বাদলা দিনে উজান হইতে
স্রোতস্বীনি আসি কয়,
প্রিয় মোর স্বামী সলিল সমাধি
অতল গর্ভে রয়।
