স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ১৪ অক্টোবর ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠেয় শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জমে উঠেছে। এখন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা। নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচনী উত্তাপও যেন আস্তে আস্তে বাড়ছে। বিশেষ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আতিউর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মিনহাজ উদ্দিন মিনাল সংবাদ সম্মেলনসহ জেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের মতো কঠিন কর্মসূচি পালন করায় নির্বাচনী উত্তাপে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের শেষ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দ পর্যন্ত পরিবেশ অনেকটা নিরুত্তাপ মনে হলেও এখন ক্রমেই চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। পোস্টার-মাইকিংয়ের পাশাপাশি রাতদিন চলছে প্রার্থীদের গণসংযোগ ও পথসভা। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ৩ প্রার্থীসহ ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (নৌকা), বিএনপি মনোনীত জেলা যুবদলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইলিয়াস উদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সাবেক জিএস মিনহাজ উদ্দিন মিনাল (মোটরসাইকেল) ও পদত্যাগী ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক ভিপি বায়েযীদ হাসান (আনারস) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর তরফ থেকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-সহ ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরে সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে। পূর্বাঞ্চলের বৃহৎ ভোটব্যাংকসহ অন্যান্য এলাকাতেও দলীয় অবস্থান ধরে রেখে বিজয় নিশ্চিত করতেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপির নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন নানা গ্রুপভিত্তিক। বিএনপি প্রার্থীর তরফ থেকে সরকারের ব্যর্থতা-লাঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধরে জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল চৌধুরীর নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার মধ্য দিয়ে ধানের শীষে আকৃষ্ট করার চেষ্টায় দিন দিন গতি বাড়ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের ২ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ জাতীয় পার্টি প্রার্থীও নিজেদের অনুকূলে ভোট আদায়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আল হেলাল (টিউবওয়েল), সাবেক ভিপি মোহাম্মদ মনোয়ারুল ইসলাম (চশমা), চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোছা মিঞা (মাইক), শ্রমিক নেতা জুলহাস উদ্দিন (উড়োজাহাজ) ও আশরাফুল আলম মিজান (তালা) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তাদের মধ্যে অন্যান্য প্রার্র্থীদের প্রচার-প্রচারণা অনেকটা খুড়িয়ে খুড়িয়ে চললেও ইতোমধ্যে মনোয়ারুল ইসলামের চশমা ও আল হেলালের টিউবওয়েল প্রতীকের প্রচার-প্রচারণা অনেকটাই জমে উঠেছে।

এছাড়া মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীম আরা বেগম (হাঁস) ও শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সাবিহা জামান শাপলা (কলস) প্রতীকে লড়ছেন। দু’প্রার্থীর এ লড়াই ইতোমধ্যেই মানুষের মুখে মুখে পৌঁছে গেছে। সাবিহা জামান শাপলা নিজ দলের বাইরে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী না থাকায় তাদের ঘরানার ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
