ads

শনিবার , ৩০ মার্চ ২০১৯ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

শ্রীবরদীতে যেভাবে উঠে এলেন শহিদুল

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
মার্চ ৩০, ২০১৯ ২:২০ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরের শ্রীবরদীতে ছাত্রনেতা থেকে ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটাধিক্যে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমকের পাশাপাশি রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন তরুণ নেতা এডিএম শহিদুল ইসলাম। ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফার নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ৪ গুণ ভোট পেয়ে ওই রেকর্ড গড়েন। ফলে এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে খোদ জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে শহিদুলের নাম এখন মুখে মুখে।
জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার খরিয়াকাজীরচর ইউনিয়নের মাদারপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের পুত্র এডিএম শহিদুল ইসলাম ৩ সন্তানের জনক। তার স্ত্রী রাবেয়া শিরিন লাকী শিক্ষিতা গৃহিণী। তাদের ৩ সন্তান শাহরিয়ার কবির জয় (১৫), মাইশা তাবাসসুম জ্যোতি (১০) ও জারা (২)। জয় সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমিতে দশম শ্রেণিতে ও জ্যোতি শহরের মমতাজ মেমোরিয়াল একাডেমীতে পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে।
শ্যামলবাংলা২৪ডটকম’র অনুসন্ধানে উঠে আসে শহিদুল ইসলামের দ্রুত উত্থানসহ নানা ঘাত-প্রতিঘাতের কথোকতা। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের আদর্শের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি ১৯৯১ সালে শ্রীবরদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯২ সালে তৎকালীন উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৪-৯৫ সালে আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই কলেজ থেকে তিনি সমাজকল্যাণ বিষয়ে বিএসএস (অনার্স) পাস করলেও নানা চড়াই উৎড়াইয়ের কারণে মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি। ওই অবস্থায় ২০০৩ সালে কাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটাধিক্যে কনিষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন এবং দ্বিতীয় দফায় ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরোধিতায় সামান্য ভোটের ব্যবধানে হারলেও ২০১৬ সালে দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে অংশ নিয়ে তিনি বিপুল ভোটাধিক্যে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলেও মনোনয়ন না পেয়ে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করেন। সেইসাথে তিনি উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা, ধর্মীয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন-প্রতিষ্ঠানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৬ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝে আলোচনার ঝড় তোলেন। মনোনয়ন না পেলেও দলের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করেন। এবার তৃতীয় দফার উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তৃণমূলের ভোটে রথি-মহারথিদের ঠেকাও পরিকল্পনায় হেরে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। মনোনয়ন দেওয়া হয় দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ ও সাংগঠনিক কাজকর্মে অনেকটাই নির্লিপ্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বিদায়ী চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকাকে। আর এতে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ লোকজন ফুঁসে উঠে। প্রার্থী হতে চাপ বেড়ে যায় শহিদুলের প্রতি। একদিকে মানুষের চাপ আর তাদের প্রত্যাশা এবং অন্যদিকে এ নির্বাচনে দলের কেন্দ্রীয় শিথিলতার বিষয়টি মাথায় নিয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হন। ফলে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে। নির্বাচনে এডিএম শহিদুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীকে পান ৩৩ হাজার ৯৩ ভোট। নৌকা প্রতীকে আশরাফ আশরাফ হোসেন খোকা ৮ হাজার ১১৪ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থান লাভ করলেও দলের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম জুয়েল আনারস প্রতীকে ২০ হাজার ৪৭১ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বা নিকটতম ও জাতীয় পার্টির প্রকৌশলী ইকবাল আহসান লাঙল প্রতীকে ১১ হাজার ৩২৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করেন।
৩০ মার্চ শনিবার দুপুরে শ্যামলবাংলা২৪ডটকমকে বিজয়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, শ্রীবরদী তো নেতাদের খনি! সারাবছর মাঠে না থাকলেও নির্বাচন আসলেই তাদের ভিড় দেখা যায়। আর সেই ভিড়ের দৌড়েই কখনও দলের ত্যাগী নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা ভুলুণ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এলাকার মানুষ এবার পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল বলেই হিংসা-বিদ্বেষ ও চড়াই-উৎড়াইয়ের রাজনীতির শিকার হয়েও বিজয়ী হওয়া সম্ভব হয়েছে। মানুষ সবসময় কাছে পেতে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে বেছে নিয়েছে। এ বিজয়কে তিনি জনগণের বিজয় এবং তাদেরই ভবিষ্যত ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

Need Ads
error: কপি হবে না!