মালেক মল্লিক, শ্রীবরদী থেকে ফিরে ॥ ব্রিজ আছে; মাটি নেই। যতটুকু আছে ব্রিজ থেকে কয়েক হাত দেবে গেছে মাটি। ব্রিজটি রাস্তা থেকে বিশাল উচু। শেরপুরের শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের মধ্যে গ্রামটি যেন অযতœ-অবহেলায়, যা বোঝা যায় ব্রিজটি দেখলেই। এতে যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের আবুয়ারপাড়া হতে শিমুলচুড়া সড়কের বাকসাবাইদ ব্রিজ। এ কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালেও নেয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। তাই দু’পাশে মাটি ভরাট করে ব্রিজটি রক্ষাসহ জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার একটি অন্যতম গ্রাম হলো বাকসাবাইদ। গ্রামে রয়েছে ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, ১টি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, ১টি পুরাতন ঈদগাহ মাঠ ও ১টি পুরাতন জামে মসজিদ। এখানে বসবাস করেন নানা পেশার মানুষ। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী, শিক্ষাসহ সব দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বর্তমানে শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের মধ্যে অবহেলিত গ্রাম হচ্ছে বাকসাবাইদ। গ্রামের যোগাযোগব্যবস্থার প্রধান পথ আবুয়ার পাড়া থেকে বাকসাবাইদ ওই অকেজো কাঁচা রাস্তাটি, যার মাঝে রয়েছে একটি বিশাল উঁচু ব্রিজ।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, ব্রিজটি বেশ পুরানো। প্রায় শত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিজটি। এরপর আর কোন মেরামত নেই। প্রতি বছর বর্ষা এলেই ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ ওই সময় ব্রিজের উভয় পাশের মাটি দেবে যায়। এমনই করুণ অবস্থা শ্রীবরদী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আবুয়ারপাড়া হতে শিমুলচূড়া যাওয়ার পথে কাঁচা সড়কের ব্রিজটির। ওই পুরানো ব্রিজটির ওপর দিয়ে স্কুল-কলেজের হাজারও শিক্ষার্থী চলাচল করে। প্রতিদিন চলাচল করে আশপাশের ১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা ইসলামপুর ও বকশীগঞ্জের সংযোগ সড়ক হয়েও এ পথে আসেন অনেকে।
এলাকাবাসারীর দেয়া তথ্যমতে, কয়েক মাস যাবত ওই সড়কের বাকসাবাইদ গ্রামে ব্রিজের দু’পাশে মাটি দেবে গেছে। রাস্তাটি কাঁচা এবং ভাঙ্গা থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে যেতে পারে না রিক্সা, ভ্যান, সিএনজি, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। এতে রিক্সা, ভ্যানগাড়ী, সিএনজি ও অটোরিক্সাসহ যে কোনো যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাকশাবাইদ গ্রামের বোরহান উদ্দিন ও খোকনসহ অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। কেউবা হয়েছেন পঙ্গু।
বাকসাবাইদ গ্রামের ফেরদৌস আলী বলেন, শিক্ষকতা করি। প্রতিনিয়ত এ সড়কে চলাচল করতে হয়। ওই ব্রিজে মোটরসাইকেল নিয়ে ওঠা কঠিন। স্কুল শিক্ষার্থী আতিকা বলেন, আমি শ্রীবরদী গার্লস স্কুলে পড়ি। প্রায় প্রতিদিন যেতে এই পথ দিয়ে। রাস্তার ব্রিজটা খারাপ হওয়ার কারণে কোন রিক্সা আসতে চায় না ওই রাস্তা দিয়ে। একই গ্রামের চাঁন মিয়া সরকার, আকবর আলী, আলী হোসেন, এনামূল হক ও আজিজুল হকসহ অনেকে বলেন, ওই ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদুর রহমান এলাকায় থাকেন না। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিমকে বিষয়টি তারা জানানোর পরও তিনি এখনও কোনো পদক্ষেপ নেননি।
তবে চলাচলে ভোগান্তির সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, বরাদ্দ পেলে অবশ্যই ওই ব্রিজের দু’পাশে মাটি ভরাট করা হবে।