৩টি আসনে ভোটের ফলের পরিসংখ্যান
স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুরের ৩টি আসনের মধ্যে সর্বাধিক ৮৯.৬১ ভাগ ভোট পড়েছে শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে। একইসাথে জেলায় সর্বোচ্চ ৯৬.০৪ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন একই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। কেবল তাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী নিকটতম প্রার্থীদের মধ্যেও একই আসনের ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী পেয়েছেন সর্বনিম্ন ২.৪৫ ভাগ ভোট। নির্বাচিত অপর ২ জনের মধ্যে ৯২.৪৫ ভাগ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁন। আর ৮৯.৮০ ভাগ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন শেরপুর-১ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী হুইপ আতিউর রহমান আতিক। অন্যদিকে জেলার ৩টি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিপুল ভোটাধিক্যে নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী ১২ প্রার্থীর মধ্যে ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপির ৩ প্রার্থীসহ অপর ৯ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা, প্রদত্ত ভোট ও প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে ওই তথ্য।
শেরপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভোটের ফলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে ১৩৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ১৫৮ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৮৪৩ টি, যা মোট ভোটের ৮৯.৬১ ভাগ। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৩১ ভোট বাতিল হলেও বৈধ ভোট ছিল ৩ লক্ষ ১১ হাজার ১১২টি। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৩ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর নৌকা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩ লক্ষ ৪৪২টি, যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৯৬.০৪ ভাগ। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৭ হাজার ৬৫৮ ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের ২.৪৫ ভাগ। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী নুরুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৮ ভোট।
শেরপুর-১ (সদর) আসনে ১৪০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৩৭৮ জন। এর মধ্যে ৬ হাজার ৩৪৩ ভোটের দু’টি কেন্দ্র স্থগিত হলেও বাকি ১৩৮টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৬৩৫ টি, যা মোট ভোটের ৮৮.০৫ ভাগ। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৫৮ ভোট বাতিল হলেও বৈধ ভোট ছিল ৩ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৭৭টি। অন্যদিকে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৫ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী হুইপ আতিউর রহমান আতিকের নৌকা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪৫২টি, যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৮৯.৮০ ভাগ। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী ডাঃ সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৬৪৩ ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের ৮.৬৫ ভাগ। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এডভোকেট মতিউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে ৮৪৪ ভোট, সিপিবি প্রার্থী আফিল শেখ কাস্তে প্রতীকে ৪৭০ ভোট ও শেষ পর্যায়ে নীরব হয়ে যাওয়া জাতীয় পার্টির উন্মুক্ত প্রার্থী ইলিয়াস উদ্দিন লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬৮ ভোট।
এছাড়া শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে ১২০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৩ লক্ষ ২৫ হাজার ৫২০ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ২ লক্ষ ৭২ হাজার ৪৮০ টি, যা মোট ভোটের ৮৩.৬৭ ভাগ। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৮৭ ভোট বাতিল হলেও বৈধ ভোট ছিল ২ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৩টি। অন্যদিকে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁনের নৌকা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৩৬টি, যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৯২.৪৫ ভাগ। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেল ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ১২ হাজার ৪৯১ ভোট, প্রদত্ত ভোটের ৪.৫৮ ভাগ। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুস সাত্তার হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৪৮ ভোট ও অপর প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির উন্মুক্ত প্রার্থী আবু নাছের বাদল লাঙল পেয়েছেন ১ হাজার ৩১৮ ভোট।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ আসনে পঞ্চম দফায় (১৯৯১,১৯৯৬,২০০৮,২০১৪ ও ২০১৮), শেরপুর-১ (সদর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক টানা পঞ্চম দফায় (১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮) এবং শেরপুর-৩ আসনে একই দলের প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁন টানা তৃতীয় দফায় (২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮) বিপুল ভোটাধিক্যে নির্বাচিত হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন।