শ্যামলবাংলা ডেস্ক : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দাবি আদায় করতে চায়। এমন অবস্থায় কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে এর দায়ভার সরকারের। কারণ বল এখন সরকারের কোর্টে। তিনি ৭ নভেম্বর বুধবার বিকালে রাজধানীর বেইলী রোডে তার বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকের সংলাপে আমরা ৭ দফা দাবি নিয়ে সীমিত পরিসরে আলোচনা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছি’। তিনি আরও বলেন, গায়েবি মামলা প্রত্যাহার এবং ভবিষ্যতে ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১ টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন ড. কামাল হোসেনসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১১ জন নেতা। সংলাপ শেষে বেলা ৩টায় তিনি বেইলী রোডের বাসায় ফেরেন। এরপর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে প্রায় দেঢ় ঘণ্টা রূদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এরপর সংলাপের বিষয়ে কথা বলতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ড. কামাল হোসেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ প্রমূখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা জনগণের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। সংলাপ যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে চেষ্টা করব। সরকার যদি আমাদের দাবি না মেনে, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তফসিল ঘোষণা করে- তাহলে আমরা আগেই আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করে রেখেছি। আমরা আন্দোলনে আছি’।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল রাজশাহীতে রোডমার্চ হবে। পরদিন সেখানে সমাবেশ হবে। সংলাপ আমাদের আন্দোলনেরই অংশ। যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। সরকার যদি তা না চায়, তার দায়ভার তাদের। আমরা আমাদের দাবিগুলো নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি’।
তফসিলের সঙ্গে আলোচনার কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রয়োজনে তফসিল পেছানো হতে পারে।
তিনি বলেন, অর্থবহ নির্বাচনই আমাদের দাবি। এই দাবি নিয়েই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছি। এখন এই দাবি যদি সফল না হয়, কোনো সমাধান না আসে তাহলে সেই দায় সরকারেরই।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আলোচনা হয়েছে, তবে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বলেছি, তিনি আইনগতভাবেই জামিন পাওয়ার যোগ্য।
প্রথম দফা সংলাপে সন্তুষ্ট হতে পারেননি, এবার সন্তুষ্ট হয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণ আশার আলো দেখলেই সংলাপ সফল হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই দাবি আদায় করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘তফসিল ঘোষণা করতে আমরা মানা করেছি। এরপরও যদি তারা করে, নিশ্চয় আমরা পছন্দ করব না। তাহলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করব। আমরা আমাদের মতো করে বলেছি, তফসিল রি-সিডিউল করা যেতে পারে। আমরা সেই দাবিই তুলেছি’।